uadmin ৪ নভেম্বর ২০২৩ , ৮:৪৩ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাট: সেতু আছে কিন্তু সংযোগ সড়ক নেই। তাই ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুতে উঠতে হয় বাঁশের সাঁকো বেয়ে। সেতু নির্মাণের এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেনি। এলাকাবাসী বাধ্য হয়ে নিজ উদ্যোগে বাঁশ দিয়ে তৈরি করেছেন সাঁকো।
জানা গেছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কেশরঘাট এলাকার সতী নদী। যুগের পর যুগ বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পার হতো দুই ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ। স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে এক বছর পূর্বে সেতু নির্মাণের কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ভূমি জটিলতার অজুহাতে নির্মাণ করা হয়নি সংযোগ সড়কের কাজ। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে দুই ইউনিয়নের মানুষ।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৫ মার্চ ৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে কেশরঘাটে সেতু নির্মাণকাজ শরু হয়। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের এর ৩০ সেপ্টেম্বর। সময় অনুযায়ী ৮১ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুর কাজ শেষ হলেও ভূমি জটিলতার কথা বলে নির্মাণ করা হয়নি সংযোগ সড়কের কাজ।
স্থানীয়রা জানায়, কেশরঘাটে দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে একটি সেতু নির্মাণ হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুর সুফল ভোগ করতে পারছেন না এলাকাবাসী। সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হলে দুই ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতে সুবিধা হবে।
খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুস সালাম (৫৫) বলেন, কেশরঘাট হয়ে জেলা শহরে যেতে যুগের পর যুগ বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে পারাপার হতে হতো। বর্ষাকালে ভোগান্তি আরও বেশি পোহাতে হতো। জনগণের ভোগান্তি নিরসনে সরকার একটি সেতু নির্মাণ করে দিলেও যাতায়াতের উপযোগী না হওয়ায় ভোগান্তির সমাপ্তি হয়নি।
জেলা শহর থেকে কেশরঘাট হয়ে বাড়ি ফেরা মোটরসাইকেল আরোহী নাজমুল হক (৩৫) বলেন, সেতু হলেও শেষ হয়নি সংযোগ সড়কের কাজ। এতে পূর্বের মতোই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। কেশরঘাট ব্যতিত জেলা শহরে যেতে প্রায় ৫ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। ফলে সময়ও ব্যয় বেশি হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াকুব আলী (৫০) বলেন, বাঁশের সাকো থাকাকালীন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হতো। বর্তমানে সেতু আছে তবে রাস্তা নেই। তাই ঝুঁকিও কমেনি। হারাটি ইউনিয়নের বাসিন্দা কৃষক খয়বর আলী (৪৫) বলেন, জনগণের সুবিধার জন্য সেতু নির্মাণ হয়েছে। ব্রিজের দুই পাশে সড়ক নির্মাণের কাজ হলে ব্রিজের অপর পাশে থাকা জমির ফসল বাজারজাত করণে সুবিধা হবে।
সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি শাহাজামাল বলেন, নির্ধারিত সময়ে সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। তবে ভূমি জটিলতা থাকায় সংযোগ সড়কের কাজ হয়নি। শিগগিরই সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতারুজ্জামান হাসান (পিএমপি) বলেন, সম্প্রতি ভূমি জটিলতা সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। সেতুর দুইপাশে সংযোগ সড়কের কাজ শুরু করা হবে। দ্রুতই যোগাযোগের জন্য উপযোগী হবে সেতুটি।