জাতীয়

সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের যে বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

  সদরুল আইন, স্টাফ রিপোর্টার ২৬ জানুয়ারি ২০২৪ , ৯:২৭ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগ থেকে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী তাদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।

আমন্ত্রিত প্রায় তিনশ নারী মনোনয়ন প্রত্যাশীরা গণভবনে উপস্থিত হয়ে তাদের আবেদন নিবেদন করেছেন। অনেকে প্রধানমন্ত্রীকে বায়োডাটাও দেওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি পাড়াপাড়ি করেছেন।

তবে প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্ট ভাবে বলে দিয়েছেন যে এই সব বায়োডাটা বা সিভির কোন দরকার নেই। প্রধানমন্ত্রী নারী আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের যারা সামনের আসনে বসেছিলেন, তাদের দিকে তাকিয়ে দেখেন, অধিকাংশই বিভিন্ন সময়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্টভাবে বার্তা দিয়েছেন, যারা একবার নারী সংসদ সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন, তারা আর নারী সংসদ সদস্য হিসাবে মনোনয়ন পাবেন না।

এরপর প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিভিন্ন সেক্টরে যারা কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা অবদান রেখেছেন তাদেরকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদেরকে গণভবনে ডেকে নিয়ে এসে প্রধানমন্ত্রী একটি প্রাক যাচাই করেছেন বলেই মনে করেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।

উল্লেখ্য, এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যে আসন পেয়েছে তার ভিত্তিতে তারা ৩৭ টি সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন দিতে পারবে।

এ ছাড়াও স্বতন্ত্ররা ১১ টি আসনে মনোনয়ন দিতে পারবে। এই ৪৮ টি আসনের মনোনয়নের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ মুখ্য ভূমিকা পালন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইতোমধ্যে প্রায় সহস্রাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন লাভের জন্য বিভিন্ন জায়গায় দেন দরবার করছেন, ছোটাছুটি করছেন। আর এরকম প্রেক্ষাপটে এই মনোনয়ন প্রত্যাশীদেরকে গণভবনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বলে আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছেন।

এখানে প্রধানমন্ত্রী একটি বড় নীতিনির্ধারণী ভাষণ দেন। এছাড়াও উপস্থিত যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন, তাদের প্রত্যেকের নাম জানতে চান। তবে নাম বলতে গিয়ে অনেক মনোনয়ন প্রত্যাশী তাদের ত্যাগ এবং অবদানের কথা স্মরণ করেছেন।
অনেকেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন।

তবে তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি এসবকে প্রশ্রয় দেননি। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যোগ্যতার ভিত্তিতেই মনোনয়ন দেওয়া হবে। মনোনয়ন কারা পাবে, না পাবে তা চূড়ান্ত করা হবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভায়।

তবে শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে তারা মনোনয়ন পেতে যাচ্ছে তার একটা সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। প্রথমত, বিগত ১৫ বছর যারা সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন, তাদেরকে আর মনোনয়ন দেওয়া হবে না বলেই বার্তা দেওয়া হয়েছে।

দ্বিতীয়ত, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে যারা পরাজিত হয়েছেন তাদেরকেও মনোনয়ন না দেওয়ার ব্যাপারে একটা নীতিগত অবস্থান রয়েছে আওয়ামী লীগের।

তৃতীয়ত, বিভিন্ন সময়ে যারা রাজনৈতিক সংগ্রামে দলের জন্য অবদান রেখেছেন, সংকটের সময় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন অথচ এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কোন কিছুই পাননি এরকম নেত্রীদেরকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা অবদান রেখেছেন সেই সমস্ত ব্যক্তিদেরকেও মনোনয়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

মনোনয়নে শুধুমাত্র যে রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরকে নেয়া হবে তা নয়, বরং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশায় যারা অবদান রেখে চলেছেন তাদেরকেও সংসদ সদস্য হিসেবে নিয়ে আসার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

আর শেষ পর্যন্ত কারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন তা চূড়ান্ত ভাবে বুঝা যাবে যখন নির্বাচন কমিশন সংরক্ষিত আসনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে এবং এই তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ তার নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করবে তখন।