এস এম রাফি ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ১১:১৭ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
আশরাফুল ইসলাম গাইবান্ধাঃ
গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তারা সময় মতো অফিসে আসা যাওয়া করছেন না। উপজেলায় কর্মরত কর্মকর্তাগণ বেশীরভাগ পাশ্ববর্তী রংপুর ও বগুড়া হতে অফিস করেছেন। আসা যাওয়ার সময়ে বেশীরভাগ সময় অফিসে আসতে দেরী হয়ে থাকে। এতে করে সুবিধাভোগীদের পাশাপাশি খোদ উপজেলার সরকারি কর্মকর্তাগণ এবং উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন ও দূর্ভোগ পোহাচ্ছে এমন অভিযোগ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সেবা নিতে আসা অসংখ্য সেবা প্রত্যাশীদের ও স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের।
সেবা প্রত্যাশীদের অভিযোগের সূত্র আজ ২৮ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার পলাশবাড়ী উপজেলা কার্যালয়ে সকাল ঠিক সাড়ে নয়টায় উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসারের কার্যালয়,উপজেলা দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তার কার্যালয়, বিএডিসি কর্মকর্তার কার্যালয়, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয়, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কর্যালয়,উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়, উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের কার্যালয় সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায় কোন কর্মকর্তা দশটার আগে কেউ উপস্থিত হয়নি। তবে কিছু অফিস খোলা, আবার কিছু অফিসে তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। কিছু দপ্তরে পিয়ন, অফিস সহকারী আছে,আবার কোন দপ্তরে কর্মকর্তা কর্মচারী দপ্তরের কাউকে পাওয়া যায়নি। উপজেলার নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ছাড়া উপজেলার পৃথক দপ্তর গুলোর কর্মকর্তা কর্মচারিরা মনগড়া ভাবে অফিসে আসেন ও চলে যান বলে জানা ও দেখা যায়। এছাড়াও পরিষদের ভিতরে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অফিসের কৃষি অফিসার কে পাওয়া না গেলে, পাওয়া যায় কৃষি সম্প্রসারন অফিসারসহ ,২জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও ১ জন পিয়ন কে। বের হয়ে পাট অফিসারের কার্যালয়ে সেখানে জনবল না থাকায় পাট অফিসার বেচারা অফিস খুলে নির্জন নিরিবিলি একাই অফিসে বসে আছেন।
সমবায় অফিসারের কার্যালয়ে পিয়ন রুম খুলে বসে আছেন কিন্তু অফিসার নেই তিনি নাকি রংপুরে প্রশিক্ষণ দিতে যাবেন। সামনে বের হতেই দেখা মিললো উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার সাথে নিচতলা থেকে তিনি অফিস সহকারীকে উদ্দেশ্য করে চিল্লাইয়া বলছেন এই রুম থেকে এত ধোয়া বের হচ্ছে কিসের। বুঝলাম অফিস সহকারী অফিসে বসে ধুমপান করছেন। কার্যালয়ে গিয়ে দেখা মিললো উপজেলা মৎস্য অফিসারের সাথে তিনি মোটরসাইকেলে রওনা করেছেন জরুরি কাজে। এরপর দেখা মিললো উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে তিনি সহকারী- শিক্ষা অফিসারদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করছেন। হিসাব রক্ষণ অফিসের চিত্র তালাবদ্ধ সব শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা মিললো ২ জন অফিস সহায়ক এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান নয়ন। ২৮ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদের পর্যবেক্ষণ শেষে পলাশবাড়ী প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রতন এমন একটি তথ্য তুলে ধরেন।
মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের নির্দেশ অমান্য করে কর্মকর্তা কর্মচারিদের সঠিক সময়ে অফিসে না আসার বিষয়ে পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান নয়ন জানান, মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই লিখিত ভাবে তাকে জানানো হয়েছে। তিনি এই নির্দেশনা স্ব স্ব দপ্তরে শীঘ্রই প্রেরন করবেন। এর পাশাপাশি সরকারি নির্দেশনা পালনের জন্য সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের অনুরোধ জানান।
এ বিষয়ে সিরাজুল ইসলাম রতন এ প্রতিবেদক কে আরো জানান, তৃনমুল মানুষের সেবা প্রত্যাশার একমাত্র স্থান উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসন। সেখানে এমন অবস্থা কোন ক্রমেই কাম্য নয়।