রাজনীতি

সরকারের লুটপাটনীতির কারণে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি: রিজভী

  নিজস্ব প্রতিবেদক ১৩ মার্চ ২০২৪ , ৩:৪৬ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

সরকারের সিন্ডিকেটবান্ধব লুটপাটনীতি ও চরম ব্যর্থতায় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, শুধু খেজুর নয়, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যের দাম মানুষের আয় থেকে দুস্তর ব্যবধান। দুর্নীতিবাজ ‘ডামি সরকার’ বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। কারণ, সিন্ডিকেটবাজরা সকলেই সরকারের আশ্রিত লোক।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, সারাবিশ্বে দাম কমলেও বাংলাদেশে প্রতিদিন কেবল বাড়াচ্ছে জনগণের ‘পকেট কাটা সরকার’। বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়া—কমার সঙ্গে বিশ্ব পরিস্থিতির সম্পর্ক নেই।

দেশে জিনিসপত্র দাম বাড়া—কমার সঙ্গে সম্পর্ক আওয়ামী লুটেরাদের সঙ্গে। আওয়ামী লুটেরা আর টাকা পাচারকারীদের দমন করা না গেলে কখনোই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আসবে না।

নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে সরকার বিভিন্ন দেশের যুদ্ধের অজুহাত তুলছে দাবি করে তিনি বলেন, প্রতিদিন দাম বাড়ার নানান ধরনের উদ্ভট কারণ আবিষ্কারে ব্যস্ত সরকার। শেখ হাসিনা সিন্ডিকেটের পক্ষে জনগণকে হাইকোর্ট দেখাচ্ছেন। অথচ, বাস্তবতা ভিন্ন।

বিএনপির এ নেতা বলেন, রমজান মাসে মানুষ একটু শান্তিতে রোজা রাখবে, সাহরী করবে, ইফতার করবে, এবাদত বন্দেগী করবে, প্রত্যেকটি মানুষেরই এমন আশা—আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু গণবিরোধী অগণতান্ত্রিক সিন্ডিকেটবাজ সরকার ক্ষমতায় থাকলে মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা গভীর হতাশায় নিমজ্জিত থাকবে—এটাই স্বাভাবিক।

সরকার নিম্নমানের পচা খেজুরের দাম নির্ধারণ করে রোজাদারদের সঙ্গে উপহাস করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রমজান মাসে ইফতারের সময় খেজুর খাওয়ায় ধর্মীয় অনুভূতি কাজ করে।

অথচ ‘ডামি সরকারে’র একজন ‘ডামি’ মন্ত্রী ইফতার নিয়ে কতই না উপদেশ দিচ্ছেন জনগণকে। যেহেতু এরা অবাধ—সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এমপি বা মন্ত্রী হননি, এই কারণে তারা ‘বিগ ব্রাদার’ হয়ে রোজাদার মানুষদের নিয়ে মশকরা করছেন।

রমজান মাসে খেজুর আমদানির জন্য ভর্তুকি দূরে থাক, উল্টো খেজুরকে বিলাসী পণ্য উল্লেখ করে খেজুর আমদানির ওপর শুল্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার, বলেন রিজভী।

তিনি বলেন, খেজুরের ওপর ভর্তুকি না দিলেও ‘ডামি সরকার’ শত শত কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে সোনালী ব্যাংক, রূপালি ব্যাংককে। আওয়ামী লুটেরা চক্র ব্যাংক থেকে বিভিন্ন প্রজেক্টের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া বানিয়ে দিয়েছে।

এ সময় তিনি সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের কথা তুলে ধরে বলেন, ৯ টি ব্যাংকে জ্বলছে লাল বাতি, আরও ১২টির অবস্থা খুব খারাপ। সব মিলিয়ে ৩৮টি ব্যাংকে দুর্বল ব্যাংক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফলে ‘ডামি সরকার’ এইসব ব্যাংকগুলোকে টিকিয়ে রাখার জন্য শত শত কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে।

ঋণখেলাপি, লুটেরা, টাকা পাচারকারীদের বাঁচিয়ে রাখতে ভর্তুকি দিলেও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ইফতার করার জন্য খেজুর আমদানিতে ভর্তুকি দিচ্ছেন না, বলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।