সারাদেশ

সুন্দরগঞ্জে তিস্তাগর্ভে শতাধিক বসতভিটা

  সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি ২৫ জুন ২০২৪ , ৪:৩৮ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":false,"containsFTESticker":false}

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের বিভিন্নস্থানে তীব্র ভাঙ্গণে শ’ শ’ পরিবারের বসতভিটা তিস্তানদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙ্গণ অব্যাহত থাকায় হুমকীর সুখে পড়েছে আরো হাজার হাজার পরিবার, চাষযোগ্য জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আশ্রয়ণ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
জানা যায়, নদীভাঙ্গন ও পানিবন্দী তারাপুরে ৫০, বেলকায় ১’শ, হরিপুরে ৩’শ ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের ১’শ ৫০টিসহ মোট ৬’শ পরিবারের মাঝে জরুরী ভিত্তিতে ৫’শ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা, ৬০টি টর্চ-লাইট প্রদান করা হয়েছে। দুর্গত পরিবারগুলোতে চলছে ঘরবাড়ি সরিয়ে নেয়ার পালা। গৃহ-পালিত পশু-পাখি, শিশু-নারী, বয়োবৃদ্ধসহ পরিবারের আসবাবপত্র নিয়ে পানিবন্দী ও নদীভাঙ্গণ কবলিত এসব পরিবারের মানুষ-জন চরম বিপাকে পড়েছেন। কেউ কেউ নদী রক্ষা বাঁধের রাস্তা, পার্শবর্তী কোন স্বজনের বাড়ি,দ বা, কোন প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিলেও অত্যন্ত দুর্বিসহ জীবন-যাপন করছেন। তারাপুর ইউনিয়নের লাটশালা ও খোর্দ্দার চরে ৫০টি, বেলকা ইউনিয়নের কয়েকটি চরে ১শ’টি, হরিপুর ইউনিয়নের কানি-চরিতাবাড়ি, চর-মাদারীপাড়া, রাঘব, মাদারীপাড়াসহ কয়েকটি স্থানে ৩শ’টি ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের কেরানীরচর, ভাটী-কাপাসিয়া, উজান বুড়াইল, বাদামেরচরসহ কয়েকটি চরের ১শ’টিসহ মোট ৬ শ’টি পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে তালিকাভুক্ত করে পরিবার প্রতি ৫শ’ টাকা করে সহযোগিতা প্রদান করা হলেও এ সংখ্যা আরো অনেক বেশি বলে নদী বেষ্টিত এসব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানান। শ্রীপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এটিএম আজহারুল ইসলাম জানান, ইউনিয়নের বাবুর বাজারের পূর্বদিকে উত্তর শ্রীপুর ও পোড়ারচরে তিস্তানদীর ভাঙ্গণ ও পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন বেশ কিছু পরিবার। কাপাসিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জু মিয়া জানান, তিস্তানদী বেষ্টিত এ ইউনিয়নের বিভিন্ন চরে তীব্র নদীভাঙ্গণ দেখা দেয়ায় মানুষজন বিপাকে পড়েছেন। হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোজহারুল ইসলাম জানান, এ ইউনিয়নের বেশির ভাগটাই তিস্তা নদীর বিভিন্ন চরে অবস্থিত। তাই, নদীভাঙ্গণ ও পানিবন্দী হয়ে পড়া মানুষের মাঝে চরম হতাশা বিদ্যমান। বেলকা ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ্ জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও পানিবন্দী হযে পড়া অবধারিত। ইউনিয়নের অধিকাংশ তথা ৯০ শতাংশ ভূ-খণ্ডই তিস্তানদী বেষ্টিত। তারাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, এ ইউনিয়নের লাটশালার চর ও খোসর্দ্দার চরের কয়েকটি ওয়ার্ড তিস্তানদী বেষ্টিত। চন্ডিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী মোস্তফা মাসুম জানান, উজানে অবস্থিত হরিপুর ইউনিয়নের নামে পরিচিত হরিপুর খেঁয়াঘাট নদীভাঙ্গণ জনিত কারণে দীর্ঘদিন ধরে চন্ডিপুর ইউনিয়নের উজান বোচাগাড়ি মৌজায় অবস্থিত। ঐ খেঁয়াঘাট থেকে কামারেরভিটা নামক স্থান পর্যন্ত কয়েকটি পাড়ার শ’ শ’ বসতভিটা, আবাদী জমি বিগত বছরগুলোতে তিস্তানদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এবারেও ভাঙ্গণ ও পানিবন্দীর আশঙ্কা রয়েছে। কঞ্চিবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মানোয়ার আলম সরকার জানান, উত্তর কালির খামার গ্রামের একটা অংশ তিস্তানদীকূলে অবস্থিত। প্রতি বছর বন্যায় ঐ পাড়ায় নদীভাঙ্গণ ও পানিবন্দী হয়ে পড়ে শ’ শ’ পরিবার। এবারেও ২টি পরিবারের বসতভিটা তিস্তানদীগর্ভে বিলীন হয়েছে আর এ স্থানে বরাবরই পানিবন্দী হয় কমপক্ষে ৫শ’ পরিবার। শান্তিরাম ইউপি চেয়ারম্যান এবিএম মিজানুর রহমান জানান, এ ইউনিয়নের পূর্ব-শান্তিরাম গ্রামের ঝগড়ার চরস্থ ৩’ শতাধিক পরিবার তিস্তানদীকূলে অবস্থিত হওয়ায় প্রতিবছর পানিবন্দী ও নদীভাঙ্গণের কবলে এসব মানুষজন দুর্বিসহ জীবন যাপন করেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওয়ালিফ মন্ডল জানান, নদী ভাঙ্গণ কবলিত ৬শ’ পরিবারে জরুরী ভিত্তিতে ৫শ’ টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। তাদের সহযোগিতার জন্য বরাদ্দ চেয়ে চাহিদা পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা- তরিকুল ইসলাম জানান, ইতঃমধ্যে উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদীভাঙ্গণ কবলিত স্থানগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। এসব পরিবারে তাৎক্ষণিকভাবে ৩ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে কিছু পরিবারে টর্চলাইট প্রদান করা হয়েছে। দুর্গত পরিবারগুলোর জন্য ত্রাণ তৎপরতা বাড়াতে বরাদ্দ চেয়ে চাহিদা পাঠানো হয়েছে।