বিবিধ

‘সূর্য উৎসব’ এবার চিলমারীতে

  এস এম রাফি ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ , ১০:১০ পূর্বাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

এস, এম রাফি,চিলমারী থেকেঃ

নতুন বছরের প্রথম সূর্যোদয় টেলিস্কোপ দিয়ে দেখা এবং রাতের আকাশ দেখা। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিজ্ঞান উৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় চর শাখাহাতী থেকে। প্রত্যন্ত এই চর থেকে বছরের প্রথম সূর্যোদয় দেখার অপেক্ষায় শতাধিক শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল এসোসিয়েশনের আয়োজনে চিলমারী উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায়  ৩০ ডিসেম্বর থেকে নতুন বছরের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত এই সূর্য উৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।  এতে মিডিয়া পার্টনার প্রথম আলো ও চ্যানেল আই।

এমন প্রত্যন্ত এলাকায় এ আয়োজন চিলমারীকে সারাবিশ্বে তুলে ধরতে এবং  পর্যটন ও অর্থনৈতিক  বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে বলে অনেকেই মনে করছেন।

সচেতন নাগরিক হিসেবে মাইদুল ইসলাম মনে করেন, চিলমারীতে বিজ্ঞান উৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এটি  আমাদের জন্য পরম সৌভাগ্য। শিশুরা বিজ্ঞানকে ভালোবাসবে বিজ্ঞানের প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়বে, উদ্ভাবনী  ভাবনার বিকাশ ঘটবে। গ্রামের শিশুরা বদ্ধঘর থেকে বের হয়ে মহাকাশ ও বিশ্ব সম্পর্কে জানবে এটা আমাদের চাওয়া। স্থানীয়ভাবে প্রতি বছর এরকম আয়োজন হলে বিজ্ঞানের জ্ঞানের প্রসার ঘটবে। আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যল এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মশহুরুল আমিন জানান, দীর্ঘ ২২ বছর ধরে এই সূর্য উৎসব বা নতুন বর্ষের প্রথম সূর্যোদয় দেখার বিষয়টি করে আসছি। আমরা সর্বপ্রথম সেন্টমার্টিনের ছেড়া দ্বীপ থেকে প্রথম সূর্যোদয় দেখা শুরু করেছিলাম। ঠিক তখন থেকেই দেখতে দেখতে ২২ বছর পার হয়ে গেছে। এবার আমরা চিলমারীর একটি চর থেকে টেলিস্কোপের মাধ্যমে সূর্যোদয় দেখবে। সেখানে ১৫০জন শিক্ষার্থীদের নিয়ে রকেট বানানো সহ বিজ্ঞান বিষয়ে বিভিন্ন আলোচনা করব।

আরিশা পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তার অভিভাবক রোজিনা আক্তার বলেন, মেয়ে  স্কুলে যায় যেখানে কোন প্রাকটিক্যাল ক্লাস নেই। সে বাসায় একা একা চিত্রাঙ্গন করে আবার কাগজ কেটে বিভিন্ন খেলনা তৈরী করে এটা ওর ভালো লাগে বিজ্ঞান উৎসবে নিশ্চই প্রাকটিক্যাল কিছু হবে তাই মেয়েকে অংশগ্রহণ করাবো।

আয়োজক কমিটির অন্যতম একজন সংগঠক ও কলামিস্ট নাহিদ হাসান বলেন, চিলমারীর জন্য এটা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা। চিলমারীকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরা ও তার পর্যটন ও অর্থনৈতিক  বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এটি। অন্যদিকে চরের সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের এটা আশীর্বাদের মত। অ্যাস্ট্রোনমিক্যল এসোসিয়েশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।

সূর্য উৎসব ও বিজ্ঞান উৎসবে সহযোগিতা করেছেন উপজেলা প্রশাসন। ইউএনও মোঃ মাহবুবুর রহমান জানান,  বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত। আর, এর জন্য প্রয়োজন বিজ্ঞান চর্চায় নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করা এবং বিজ্ঞান গবেষণার সূযোগ বৃদ্ধি করা। তথ্য প্রযুক্তির যুগে মহাকাশ বিজ্ঞান বিজ্ঞানের একটি অন্যতম শক্তিশালী শাখা।  এজন্যই মহাকাশ বিজ্ঞানের সাথে চিলমারী উপজেলাসহ কুড়িগ্রাম ও রংপুর উপজেলার তরুণ শিক্ষার্থীদের পরিচয় করায়ে দেয়ার লক্ষ্যেই বাংলাদেশে অ্যাসট্রোনোমিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন এর আয়োজনে নতুন বছরের সূর্য উৎসব ও বিজ্ঞান উৎসবকে চিলমারীতে আয়োজন করার আমন্ত্রণ জানানো হয়। এর মাধ্যমে এই উৎসবের অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের জীবনে বিজ্ঞান সচেতনার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক রচিত হবে। ব্যতিক্রমী ও সৃজনশীল এই আয়োজন দ্বারা চিলমারীকে জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরার জন্য থেকে আয়োজক কমিটির সকলকে, বিশেষভাবে বাংলাদেশ এ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন এর প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা পোষণ করেন।

  • বছরের প্রথম সূর্যোদয় লগ্নের আয়োজনে যা থাকছেঃ >ব্রহ্মপুত্রের চর থেকে টেলিস্কোপে প্রথম সূর্যোদয় দেখা এবং রাতের আকাশ দেখা।
    >ছোটদের বিজ্ঞান উৎসব।
    >বিজ্ঞান বিষয়ক আলোচনা।
    >অ্যাডভেঞ্চার ক্যাম্প ও রাত্রি যাপন।
    >সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা।
    >ক্যাম্প ফ্যায়ার ও বারবিকিউ এবং আরো অনেক কিছু।