ফিচার

২০ বছর ধরে শীতের পিঠা বিক্রি করেন সোলাইমান ও বুলি

  মো. এমদাদুল হক, বগুড়া ৬ ডিসেম্বর ২০২৩ , ১১:০৭ পূর্বাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

উত্তরবঙ্গে চলছে শীতের মৌসুম। শীতের শুরু থেকে রাস্তার মোড়ে মোড়ে বসেছে বাহারি পিঠার হাট। উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে জনপ্রিয় পিঠার নাম ভাপা পিঠা। ভাপা ছাড়া চিতই, ঝালের পিঠা পুলি এবং পাটিসাপটা পিঠা বিক্রির ধুম পড়েছে বগুড়ার শহরের বিভিন্ন জায়গায়।

প্রতিদিন বিকেলে ভাপাসহ হরেক রকম পিঠার হাট বসে শহরের বিভিন্ন আনাচে কানাচে । প্রতিটি পিঠার মূল্য ১০ থেকে প্রকারভেদে ৩০ টাকা পর্যন্ত। নবান্নের এই নতুন ধানের পিঠা খেতে বিভিন্ন বয়সের নারী, পুরুষ দোকানের চারদিকে অপেক্ষমাণ থাকেন। দোকানদাররাও দারুণ ব্যস্ত সময় পার করেন।

সরেজমিনে দেখা মেলে রহমান নগর জব্বার ক্লাবের পাশে ছোট দোকান সাজিয়ে সোলাইমান ও তার স্ত্রী বুলি নানা ধরনের পিঠা বানাচ্ছেন বিক্রির আশায় ।

তাদের সাথে কথা হয় ভাপা ও চিতই পিঠা খেতে খেতে। তারা জানান, ২০ বছর ধরে শীতকাল এলেই এসব পিঠার দোকান দেন। এই ছোট দোকান থেকেই পরিবার স্বচ্ছলভাবে চলতে পারে।
তারা আরো জানান, দিনে ১৫ কেজি চালের আটা,৫ কেজি গুড় ভাপা পিঠার জন্য নিয়ে আসনে। এর সাথে চিতই পিঠা,পাটিসাপটা ও ঝালের পিঠা বিক্রি করেন।

প্রকারভেদে ভাপা ১০ টাকা, চিতই ১০ টাকা, ঝাল পিঠা ৩০ টাকা বিক্রি করছেন। ছোট দোকান, পিঠা প্রেমী বেশি তাই তাদের দম নেওয়ার সময়টুকু হারিয়ে গেছে। এত ব্যস্ততার মধ্যেই এসব তথ্য দেন এই দম্পতি।

রাস্তার ধারে দোকান শুরু বিকাল ৪ টা থেকে আর বন্ধ করেন রাত ১১ টায়। এতে ২৫০০শ থেকে ৩ হাজার টাকা বিক্রি শেষে বাড়ি ফিরেন স্বামী স্ত্রী । এতে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা লাভবান হন প্রতিদিন।

এরকম সোলাইমান ও বুলির মতো শহরের অনেক জায়গায় ছোট ছোট দোকান সাজিয়ে সংসারের হাল ধরেছেন অনেকেই।
বগুড়া শহরের সাথমাথায় দেখা মেলে ভ্যানে করে দোকান সাজিয়ে বিক্রি করছে ভাপা,চিতইসহ নানা ধরনের খাবার। চিতই পিঠার জন্য ১৫ থেকে ২০ প্রকারের মসলাও সাজিয়ে রেখেছেন দোকানে।

খোকান পার্কের সামনে রহিম নামের এক পিঠাবিক্রতা বলেন, পিঠা মানুষের মনের খোরাক। এ অঞ্চলের নিয়ম রীতির মতো তাই আমাদের বিক্রিও বেশি। শীতের আগে ফেরি করে বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করলেও পিঠা বিক্রিতে লাভ বেশি তাই পিঠা বিক্রিতে নেমেছি।

পিঠা কিনতে আসা খোরশেদ আলম বলেন,শীতের সময় গ্রামে মায়ের হাতে তৈরি করা অনেক রকমের পিঠা খাইতাম।এখন চাকরি করার কারণে শীতের সময় গ্রামে যাইতে পারি না, মায়ের হাতের সেই পিঠাগুলো আর তেমন একটা খাইতে পারি না। তাই শহরেই বাধ্য হয়ে খাইতে হয়,সোলাইমান চাচার কাছ থেকে অনেক আগে থেকেই আমি পিঠা খাই বেশ ভালো লাগে।