ধর্ম ও নৈতিকতা

৬ মাসে হাফেজ হলো জোবায়ের

  অনলাইন ডেস্ক ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ , ৯:৩১ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

মাত্র ৬ মাসে হিফজ সম্পন্ন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে লক্ষ্মীপুরের হাফেজ জোবায়ের রহমান ওহী। শহরের মটকা মসজিদ সংলগ্ন তাহফিজুল উম্মাহ হিফজ মাদরাসার ছাত্র সে।

বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলেকে কুরআনের হাফেজ বানাবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণের আগেই ২০১৪ সালে সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন তিনি। তখন জোবায়েরের বয়স মাত্র ২ বছর। তবে বাবাকে হারালেও বাবার স্বপ্ন বৃথা যেতে দেয়নি ছোট্ট শিশু জোবায়ের। যেনতেনভাবে নয়, বরং বাবার সেই স্বপ্ন পূরণ করলেন বিস্ময়কর ইতিহাস সৃষ্টির মাধ্যমে।

এই কীর্তি অর্জনকারী জোবায়ের রহমানের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের সোনাপুর ইউনিয়নে। তার বাবা একজন প্রবাসী এবং রাজনীতিবিদ ছিলেন। তার মায়ের নাম জান্নাতুল ফেরদাউস।

এই অসাধ্যকে কীভাবে সাধ্য করলেন সেই প্রশ্নের উত্তরে শিশু জোবায়ের রহমান বলেন, আমার বাবার স্বপ্ন ছিল আমি একজন হাফেজ হবো। বাবাকে হারালেও বাবার স্বপ্ন হারাতে চাইনি। সেই স্বপ্ন পূরণে আমি ছিলাম প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সবাই ঘুমালেও আমি না ঘুমিয়ে সবক পড়তাম। ভোর রাতে আগে আগে উঠে যেতাম। সময় নষ্ট না করে পরিশ্রম করতাম। ফলে আল্লাহ তায়ালা আমার জন্য তা সহজ করে দিয়েছেন। তবে এই সফলতা আমার একার নয়। আমার শিক্ষক, প্রতিষ্ঠান, অভিভাবক সকলের দোয়া, আন্তরিকতা ও প্রচেষ্টায় আমি তা অর্জন করতে পেরেছি।

জোবায়ের আরো জানান, তিনি শুধু হাফেজ নয়, ভবিষ্যতে হতে চান একজন প্রকৃত আলেম। নিবেদিত করতে চান নিজেকে দ্বীন ইসলামের খেদমতে। তার সেই স্বপ্ন পূরণে তিনি সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন।

তাহফিজুল উম্মাহ হিফজ মাদরাসার পরিচালক মাওলানা সালেমুদ্দিন বলেন, জোবায়ের একজন বিনয়ী ও মেধাবী শিক্ষার্থী। তার বাবা না থাকলেও আমরা তাকে বিশেষ তত্ত্বাবধানে রেখেছি। হিফজ শুরুর প্রথম দিনেই সে এক পারা সবক শুনিয়েছে। তার সদিচ্ছা, শিক্ষকদের প্রচেষ্টা এবং প্রতিষ্ঠানের আন্তরিকতায় আজকে সে এই বিস্ময়কর ইতিহাস সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। আমরা তাকে নিয়ে আজ গর্ববোধ করছি। তার সার্বিক মঙ্গল কামনা করি।

জানা যায়, তাহফিজুল উম্মাহ হিফজ মাদরাসার পথ চলার বয়স মাত্র দুই বছর। এরই মাঝে তা সফলতার সাথে এগিযে যাচ্ছে। চলতি বছরে হাফেজ জোবায়েরসহ আরো ৫ জন শিক্ষার্থী হিফজ সম্পন্ন করেছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।