রাবি প্রতিনিধি ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ , ৪:১২ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
“বাংলাদেশ এনিমেল হাজবেন্ড্রি কাউন্সিল আইন ২০২৩” প্রণয়নের নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ভেটেরিনারি ছাত্র সমিতি এবং বিভাগের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এসময় আন্দোলনরত ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে এক শিক্ষার্থী মো. জাহিদ হাসান বলেন,আমরা সবাই অবগত আছি বাংলাদেশ ভেটেনারি আইন ১৯৮২ সাল থেকে চলে আসছে।তার সাংঘর্ষিক হিসেবে মৎস্য ও প্রানীসম্পদ অধিদপ্তরের সচিব ড. নাহিদ রশিদ তার বিদায় বেলায় এনিমেল হাজবেন্ড্রি আইন-২০২৩ গঠন করার চেষ্টা করছেন।এটা গঠন করলে আমাদের প্রানী সম্পদের যে উন্নয়ন সেটা ব্যহত হবে।নির্বাচনের এই সময় যখন মন্ত্রী মহাদয় ও অন্যন্যরা যখন নির্বাচন কাজে ব্যস্ত তখন তিনি তার ভাড়াটিয়া দালালদের দ্বারা মিটিং করে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমান করে এই কাউন্সিল গঠন করার চেষ্টা করছে।তিনি আরো বলেন, আমরা সারা বাংলাদেশের ভেটেনারি সমাজ এই কাউন্সিল মেনে নিবো নাহ।আমরা ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলন করছি।এই কাউন্সিল রহিত করা না হলে আমরা মৎস্য ও প্রানী সম্পদদপ্তর অচল করে দিবো।আমাদের ঐক্যফাটল ধরাবে এমন কাউন্সিল আমরা চাই নাহ।ও মৎস্য ও প্রানী সম্পদ দপ্তরকে রাজপথে নামার হুশিয়ারি দিয়ে তার বক্তব্য শেষ করেন।
আন্দোলনরত ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আর এক শিক্ষার্থী শাহনাওয়াজ আলামিন বলেন,প্রাণী সম্পদ বিভাগে সচিবের সেচ্ছাচারিতায় এনিমেল হাজবেন্ড্রি কাউন্সিল আইন তৈরি করতে চাচ্ছেন। সচিবের চাকরির শেষ দিকে এসে একটা নীল নকশা তৈরি করে যেতে চাচ্ছেন। বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসুয়েশন প্রাণী সম্পদ উন্নয়নে যে ভূমিকা পালন করে সেটা আমরা দেখেছি। সচিব প্রাণী সম্পদ বিভাগে একটা সংঘর্ষ তৈরি করতে এই ব্যবস্থা নিচ্ছে।
বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীরা শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন।এসময় লিখিত বক্তব্যে আলামিন মোল্লা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, গত ১৮ ডিসেম্বর মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের আহবানে আয়োজিত সভায় ‘বাংলাদেশ এনিমেল হাজবেন্ড্রি কাউন্সিল আইন-২০২৩’ প্রণয়নের নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই আইন সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, পক্ষপাতদুষ্ট এবং বিদ্যমান ‘বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন-২০১৯’ এর সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যমান ‘বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন-২০১৯’ এর বিভিন্ন ধারা ও উপধারা বিশেষ করে ধারা-২ এর উপধারা-১২ ও ১৫ এবং ধারা-৩০ অনুযায়ী প্রাণীসম্পদের উন্নয়ন, খাদ্য, উৎপাদন, স্বাস্থ্য চিকিৎসা, সম্প্রসারণ, প্রাণী ও প্রাণীজাত পণ্যের গুনগতমান নিয়ন্ত্রন, কৃত্রিম প্রজনন, প্রজনন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও ব্যবস্থাপনাসহ সার্বিক বিষয়ে পরামর্শ প্রদান ও মাননিয়ন্ত্রন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়ে থাকে। নির্বাচনকালীন সময়ে বিদায়ী সচিব, মৎস্য ও প্রাণীসম্মদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ‘বাংলাদেশ এনিমেল হাজবেন্ড্রি কাউন্সিল আইন-২০২৩’ প্রণয়নের উদ্যোগ স্পষ্টত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যার কোন যৌক্তিকতা নেই। বিদায়ী সচিব এনিমেল হাজবেন্ড্রির গ্র্যাজুয়েট হওয়ায় তিনি এই পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করছেন, যা পরবর্তীতে প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত করবে। তাই এ সিদ্ধান্ত দ্রত বাতিল করতে হবে।
তার পর তিনি তাদেত দুটি দাবি পেশ করেন।
তাদের দাবি দুটো হলো-:অনতিবিলম্বে “বাংলাদেশ এনিমেল হাজবেন্ড্রি কাউন্সিল আইন-২০২৩” প্রণয়নের নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং দ্বিতীয় দাবিটি হলো প্রাণীসম্পদ উন্নয়নের স্বার্থে প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরে ভেটেরিনারি এবং এনিমেল হাজবেন্ড্রি গ্রাজুয়েটদের দ্বন্দ্ব নিরসনে প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরে কর্মরত এন্ট্রি লেভেলে কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কোর্স চালুর সিদ্ধান্ত এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সমন্বিত কোর্স চালু করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের আহ্বানের বাস্তবায়ন।