uadmin ২৫ অক্টোবর ২০২৩ , ৫:৩৬ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
মোঃ মাসুদ রানা, স্টাফ রিপোর্টার: রাস্তা সংষ্কারের দাবীতে এবং অটোরিকশা আটকের প্রতিবাদে পৌরসভা ঘেরাও করেছে মালিক ও চালকরা। এসময় বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মানববন্ধনও করেছে তারা। বুধবার বেলা ৩ টায় নীলফামারীর সৈয়দপুরে এই কর্মসূচী পালন করা হয়। এতে শহরের তামান্না সিনেমা হল মোড় থেকে ঢেলাপীরগামী সকল অটোরিকশা নিয়ে এসে এতে অংশ গ্রহণ করে।
পৌরসভা চত্বরে অনুষ্ঠিত কর্মসূচীতে নেতৃত্ব দেন উপজেলা ইজিবাইক মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি হাজী আসলাম। তাঁর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, অটোচালক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, চালক জাবেদ আলম, ফরহাদ হোসেন ও আরমান আলী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সৈয়দপুর শহরের ৮০ ভাগ সড়কেরই জরাজীর্ণ অবস্থা। বিশেষ করে প্রধান সড়কগুলো বেহাল। তামান্না মোড় থেকে ওয়াপদা মোড় পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়ক একেবারেই চলাচল অযোগ্য। প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। ভাঙ্গছে যানবাহন, নষ্ট হচ্ছে মালামাল এবং আহত হচ্ছে লোকজন।
তারা বলেন, দীর্ঘ ৫ বছর যাবত অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছ সৈয়দপুরবাসী। পৌরসভা জন ভোগান্তি লাঘবে কোন ব্যবস্থায়ই নিচ্ছেনা। মাঝে আন্দোলন করায় ২৮ লাখ টাকা খরচ দেখিয়ে লোক দেখানো থুক পালিশ করে জনগণের টাকা তসরুপ করা হয়েছে। এক মাসও টেকেনি ওই জোড়াতালির সংষ্কার। আবার বর্ষার সময় মাটি ও রাবিস দিয়ে রাস্তার বড় বড় গর্ত ভরাট করায় কাদাপানিতে একাকার হয়ে তা আরও কষ্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এমতাবস্থায় আমরা খুবই ঝুঁকি নিয়ে কষ্ট করে চলাচল করছি। রাস্তা খারাপ থাকায় যেমন অতিরিক্ত সময় লাগে তেমনি যাত্রীও কম হয়। এতে শ্রম বেশি হলেও আয় নেই। এই পরিস্থিতিতে পৌর কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের পাশে দাঁড়ানোর পরিবর্তে উল্টো মরার উপর খাড়ার ঘা মারছে। অটো প্রতি লাইসেন্স বাবদ ২ হাজার টাকা আদায় সহ প্রতিদিন পয়েন্টে পয়েন্টে দশ টাকা করে পার্কিং ট্যাক্স নিচ্ছে।
এতে আমরা শোষণের শিকার হচ্ছি। তাই বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছি। গত ১২ অক্টোবর থানার ওসিসহ পৌর প্যানেল মেয়র কথা দেয় এক সপ্তাহের মধ্যে রাস্তা সংষ্কার কাজ শুরু করা হবে। আর রাস্তা ঠিক করা না হওয়া পর্যন্ত কোন পার্কিং ট্যাক্স নেয়া হবেনা এবং লাইসেন্সের জন্য কোন অটোরিকশা ধরাও হবেনা।
কিন্তু ১২ দিন পার হলেও রাস্তা ভালো করার কোন উদ্যোগ নাই। আবার নিয়মিত পার্কিং ট্যাস্ক নিচ্ছে এবং জোর করে ধরে এনে লাইসেন্সের দুই হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে। তাই মেয়রের কাছে এসেছি। কিন্তু তিনি আমাদের আসার কথা জেনে পালিয়েছে। আজ আমরা দাবী না মানা পর্যন্ত যাবোনা।
এর প্রেক্ষিতে পৌর নির্বাহী শহিদুল ইসলাম আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, তামান্না মোড় থেকে ওয়াপদা মোড় পর্যন্ত রাস্তা সংষ্কারের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব বিশ্ব ব্যাংকে অনুমোদনের অপেক্ষায়। দুই তিন মাসের মধ্যেই বাজেট পাইলেই কাজ শুরু করা হবে। এই কথায় অটো চালক মালিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
পরে পৌরসভার প্যানেল মেয়র শাহীন হোসেন এসে পরিস্থিতি শান্ত করতে বলেন, আমি নিজেই বুঝি রাস্তাগুলোর করুণ দশা। আমরা সঠিক ভাবে কাজ করতে পারিনি। তাই সকলের দূর্ভোগ হচ্ছে। যান চালকদের আরও দূরহ অবস্থা। তবে এতবড় রাস্তা সহসাই ঠিক করা সম্ভব নয়। অনেক টাকার প্রয়োজন। তাই আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মেইনটেনেন্স করে আপাতত চলাচল যোগ্য করা হবে। এর আগে কোন ট্যাক্স বা লাইসেন্স বাবদ টাকা নেয়া হবেনা। তাঁর আশ্বাসের পর আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি স্থগিত করে।