অর্থনীতি

ফের বাড়ল এলপিজির দাম

  uadmin ২ নভেম্বর ২০২৩ , ৪:২১ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

টানা চার মাস ধরে বেসরকারি কোম্পানির তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম বেড়েই চলেছে। চলতি মাসে ভোক্তা পর্যায়ে ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ১৮ টাকা বাড়িয়ে ১৩৮১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। একইভাবে অন্যান্য এলপিজি সিলিন্ডার ও অটোগ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন ব্যয় আরও বেড়ে গেল।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নভেম্বর মাসের জন্য নতুন দর ঘোষণা করেন চেয়ারম্যান মো. নুরুল আমিন। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত সাড়ে ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম আগের ৫৯১ টাকাই রয়েছে। যদিও এই এলপিজি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছায় না। এটি চাহিদার মাত্র এক থেকে দেড় শতাংশ পূরণ করতে পারে।

এর আগে গত জুলাই মাসে এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ছিল ৯৯৯ টাকা। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে দাম বৃদ্ধি পেতে থাকে। গত মাসে সিলিন্ডার প্রতি ৭৯ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৩৬৩ টাকা মূল্য নির্ধারণ করে কমিশন। তার আগের মাসে সেপ্টেম্বরে ১৪৪ টাকা এবং আগস্ট মাসে ১৪১ টাকা দাম বাড়ানো হয়। সবমিলে গত চার মাসে ১২ কোজি সিলিন্ডারের দাম বেড়েছে ৩৮২ টাকা।

দীর্ঘদিন ধরে আবাসিকে প্রাকৃতিক গ্যাসলাইনের সংযোগ বন্ধ থাকায় রাজধানীর পাশাপাশি বিভিন্ন শহর ও গ্রামে বিপুলসংখ্যক মানুষ এলপিজির ওপর নির্ভরশীল। বিশ্ব বাজারের সাথে মিল রেখে প্রতি মাসেই এলপিজির দাম নির্ধারণ করে বিইআরসি। কিন্তু কখনই বেঁধে দেওয়া দামে এলপিজি বিক্রি হয় না বলে অভিযোগ। নির্ধারিত দরের চেয়ে সিলিন্ডার প্রতি গড়ে ২শ থেকে আড়াইশ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দিতে হয়। অপারেটর থেকে শুরু করে খুচরা বিক্রেতা পর্যন্ত সবাই ইচ্ছে মতো বেশি দামে এলপিজি বিক্রি করছে।

কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী গাড়িতে ব্যবহৃত প্রতি লিটার অটোগ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৩.৩৬ টাকা। যা আগের মাসে ছিল ৬২ টাকা ৫৪ পয়সা। এছাড়া প্রতি কেজি এলপিজির মূল্য সংযোজন করসহ (মূসক/ভ্যাটসহ) দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১১১ টাকা ২৬ পয়সা। গত মাসে ১০৭ টাকা ০১ পয়সা দর ছিল। পাশাপাশি সাড়ে ৫ থেকে ৪৫ কেজি পর্যন্ত বোতলজাত সব এলপিজির দাম একই হারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। অন্যদিকে, বাসা-বাড়িতে কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবহার করা রেটিকুলেটেড এলপিজির লিটার প্রতি দাম শূন্য দশমিক ২৪৭৩ টাকা নির্ধারণ করেছে কমিশন। বাজারে কমিশন নির্ধারিত দামে এলপিজি না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সংস্থাটির চেয়ারম্যান জানান, কিছু কিছু জায়গায় নির্ধারিত দাম কার্যকর হচ্ছে না। সে জন্য তারা নানা রকম পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এরই মধ্যে চারটি কোম্পানিকে শোকজ করা হয়েছে। বিইআরসি নিজেও অভিযান পরিচালনা করছে, আবার ভোক্তা অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়ে অভিযানে নামার জন্য বলা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে সেসব বিক্রেতার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, ভবিষ্যতেও নেওয়া হবে।

উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে প্রতি মাসে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে আসছে বিইআরসি। এলপিজি তৈরির মূল উপাদান প্রোপেন ও বিউটেন বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। প্রতি মাসে এলপিজির এ দুই উপাদানের মূল্য প্রকাশ করে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান আরামকো। এই মূল্য বিবেচনায় নিয়ে দেশে এলপিজির দাম সমন্বয় করে বিইআরসি।