uadmin ৫ নভেম্বর ২০২৩ , ২:১৬ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
বিএনপির ডাকা দ্বিতীয় দফা অবরোধ ঘিরে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশি পাহারা বাড়ানো হয়েছে। আট দিন ধরে সেখানে পুলিশের এক স্তরের নিরাপত্তা ছিল। এখন এই বাড়তি নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কাঁটাতারের ব্যারিকেড।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পুলিশি পাহারায় নেতাকর্মীশূন্য বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। মতিঝিলে শনিবার আওয়ামী লীগের সমাবেশের কারণে বিএনপি কার্যালয়ের তিনদিকে ব্যারিকেড বসানো হয়েছিল। রাতে সেই ব্যারিকেড দুই পাশে রাখা হয়েছে।
বিএনপি কার্যালয়ের কলাপসিবল গেট তালা দিয়ে বন্ধ রয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর রাত থেকে এই কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের আসা-যাওয়াও বন্ধ। কার্যালয়ের সামনের ফুটপাত দিয়েও এখন পুলিশ কাউকে চলাচলের জন্য ব্যবহার করতে দিচ্ছে না। পথচারীদের ঘুরে যেতে বলা হচ্ছে।
নয়াপল্টনের সড়কে প্রাইভেট কার, সিএনজি, রিকশার স্বাভাবিক যান চলাচল করছে। তবে রিকশার সংখ্যাই বেশি। এই সড়কের দোকানপাট ও মার্কেটগুলো বন্ধ রয়েছে।
মোমিন মিয়া নামে রিকশাচালক জানালেন, অবরোধের কারণে ‘যাত্রী’ কম পাচ্ছেন। অনেকেই পায়ে হেঁটে চলছেন। নয়াপল্টনের গলিতে চা দোকানদার সুরুজ মিয়া বলেন, তার দোকানে প্রতিদিন চা বিক্রি হতো একশ থেকে দেড়শ কাপ। এখন অর্ধেকের কম বিক্রি হয়।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, নয়াপল্টনের সড়কে স্বাভাবিক যান চলাচল করছে। মানুষজনের স্বাভাবিক চলাচল ও নিরাপত্তা বিধানে পুলিশ বাহিনী সদা প্রস্তুত রয়েছে।
অবরোধ শুরু হওয়ার আগে শনিবার দিবাগত গভীর রাতে দলের ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহজাহান ওমর, ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী রবিবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমগ্র দেশটাকে এখন বৃহৎ কারাগার বানিয়ে ফেলেছেন। একদিকে সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন বিএনপিকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে; অপরদিকে সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারে ক্র্যাকডাউন শুরু হয়েছে।’
রিজভী আরও বলেন, ‘এবার আওয়ামী লীগ সরকারের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে দেবে না জনগণ। ধারাবাহিকভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে গ্রেপ্তারের ফলে জনগণের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমান সরকারের পদত্যাগসহ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা বাস্তবায়ন ছাড়া জনগণ রাজপথ ছেড়ে ঘরে ফিরে যাবে না।’
বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বিবৃতিতে অবিলম্বে শাহজাহান ওমর, আলতাফ হোসেন চৌধুরী এবং সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
কার্যালয় তালাবদ্ধ করে রেখে নির্বাচন কমিশনের চিঠি ঝুলিয়ে রাখাকে ‘মহাতামাশা’ অভিহিত করে রিজভী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক বিএনপির বন্ধ কার্যালয়ে ইসির চিঠি প্রেরণও ছিল আরেকটি তামাশা। আসলে সরকার নিজেদেরকে অতি চালাক ভাবছে এবং সবকিছুতেই ধরাকে সরা জ্ঞান করছে। নির্বাচনের প্রাক্কালে বিএনপিসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মীদেরকে যেভাবে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, এতে সুস্পষ্ট যে আগামী নির্বাচন যেনতেন প্রকারে অনুষ্ঠিত করে আবারও রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে নিতে আওয়ামী সরকার বদ্ধপরিকর।’