সদরুল আইন, স্টাফ রিপোর্টার ১৩ নভেম্বর ২০২৩ , ১১:৩৭ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বুধবারের মধ্যে যে কোন সময়। নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ সর্বাত্বক প্রস্তুতি গ্রহণ করে রেখেছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন থেকেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিতরণ করা শুরু হবে।
ইতোমধ্যেই মনোনয়ন ফরম চূড়ান্ত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের তিনশ আসনের প্রার্থী তালিকাও চূড়ান্ত হয়েছে।
বিএনপি নির্বাচনে আসবে এটি ধরে রেখেই আওয়ামী লীগ নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। তবে কৌশলগত কারণে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে একাধিক প্রার্থীকে প্রস্তুত থাকবে।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের যারা টিকিট পাবেন না এরকম বহু প্রার্থীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানোর জন্য সবুজ সংকেত দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো মনে করছে যে, বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্ত করবে এবং ষড়যন্ত্র চক্রান্তের অংশ হিসেবে তারা নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
তারা নির্বাচনে আসার ঘোষণা দিবে, নির্বাচনে এসে নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল করে তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নানা রকম অপপ্রচার মিথ্যাচার করবে, আন্তর্জাতিক মহলে নির্বাচন সম্পর্কে নেতিবাচক গুজব ছড়াবে।
এক পর্যায়ে তারা নির্বাচনের থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবে, যাতে আবার একটি ২০১৪ এর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং নির্বাচন বানচালের একটি প্রক্রিয়া চূড়ান্ত রূপ লাভ করে।
কিন্তু সরকার এ ধরনের ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দেবে না বলে জানা গেছে। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগ বিএনপি নির্বাচনে আসবে এটি মাথায় রেখে প্রস্তুতি গ্রহণ করলেও প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় একাধিক প্রার্থীকে প্রস্তুত রাখবে। যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তাহলে স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থীরা স্বতন্ত্র নির্বাচন করবে।
উল্লেখ্য যে, এর আগে উপজেলা নির্বাচন এবং ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের বিপুল পরিমাণ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল এবং এই ধরনের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ফলে নির্বাচনে ভোটের হার উৎসাহজনক বেড়েছিল, মানুষের মধ্যে স্বতস্ফূর্ত স্বতঃস্ফূর্ততা লক্ষ্য করা গিয়েছিল।
ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীর জন্য ভোট কেন্দ্রে আসার আগ্রহ এবং উৎসাহ দেখিয়েছিল। এবার যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে না আসে বা নির্বাচন থেকে সরে যায় তাহলে সেই মডেলটিই অনুসরণ করবে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা বলছেন যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতি তারা নিশ্চিত করতে চায়। আর একারণেই ২০১৪ এর মতো কেউ যেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত না হয় সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।
সব জায়গায় বিকল্প প্রার্থীদেরকে ঠিক করে রাখা হবে। কোথাও কোথাও প্রার্থীদেরকে সবুজ সঙ্কেত দিয়ে রাখা হবে। তারা যেন শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
আওয়ামী লীগের প্রধান লক্ষ্য হল বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না আসে বা বিএনপি যদি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় তাহলে সকল রাজনৈতিক দল আলাদা আলাদা ভাবে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপি, কিছু ইসলামি রাজনৈতিক দল তারা যদি প্রার্থী দেয় এবং আওয়ামী লীগের যদি বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচনের দাঁড়ায় তাহলে দেশে বিএনপিকে ছাড়াই একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন সম্ভব। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগ এখন থেকেই সেই কৌশল গ্রহণ করছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হতেই হবে। বিএনপি আসুক না আসুক নির্বাচন বাধাগ্রস্থ হবে না এবং বিএনপির ক্ষমতা নেই যে নির্বাচন ঠেকাবে।