সারাদেশ

টিউশনের টাকা জমিয়ে গরুর খামার, শামীম চান সরকারি সহযোগীতা

  চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ১:০৯ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের হাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা শামীম রানা (২৫)। মাধ্যমিক,উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে পরিবারের দারিদ্রতায় শুরু করেন টিউশনি। টিউশনি করিয়ে বাবাকে সহযোগীতা সহ স্নাতকের পড়াশুনার খরচও চালিয়ে যেতে হয়েছিলো শামীমকে। তবে পড়াশোনার খরচের পাশাপাশি ৪০ হাজার টাকা জমিয়ে একটি দেশি গরু দিয়েই প্রথমে শুরু করেন খামার। পরে বিক্রি করেন ৫৫ হাজার ৫০০শত টাকা। পরের বছর সেই টাকার সঙ্গে আরো ২০ হাজার টাকা যোগ করে দুইটি গরু ক্রয় করেন। সেই গরু বিক্রি করেন দ্বিগুন দামে। সাহস পেয়ে পরের বছর চারটি গরু কেনেন শামীম। প্রতি বছর নিজের খামার কে এভাবেই একটু একটু করে বড় করেছেন এই শিক্ষার্থী। টিউশনের জমানো টাকায় খামার করে স্বাবলম্বী হয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন পুরো এলাকায়।
সরেজমিনে খামারে গিয়ে দেখা যায়, নিজ বাড়ির উঠানে একটি ঘর তুলে দুই সেডে ভাগ করে একটি খামার তৈরি করেছেন। খামারটি তৈরীতে এ পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা। তার খামারে বর্তমানে দেশি বিদেশী জাত সহ ৯টি গরু আছে। দুগ্ধ খামারের পাশাপাশি দেশি ষাঁড় পালন করে প্রতি মাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা আয় করেন। গো-খাদ্যের পর্যাপ্ত জোগান নিশ্চিত করার জন্য বর্তমানে তিনি নিজের একটি জমিতে নেপিয়ার ঘাস চাষ করেছেন। গরু দেখা শোনা করার জন্য সার্বক্ষণিক একজন লোক কাজ করছেন। ঘাসের পাশাপাশি খৈলসহ প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটা তাজা করণে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। তার খামারটি একটি আদর্শ খামার।
স্থানীয় বাসিন্দা জহরুল ইসলাম বলেন, শামীম অত্যন্ত ভালো একজন খামারি। সে গরুর খামার করে দিনদিন লাভবান হচ্ছেন। তার গরুর খামার দেখে এলাকার অধিকাংশ বেকার ছেলেরা খামার করতে উৎসাহ পাচ্ছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে খামার করার। কারণ শামীম গরুর খামার করে বছরে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন।
খামারী শামীম রানা জানান, চাকরির আশায় বসে না থেকে ইচ্ছে ছিলো নিজ উদ্যোগে কিছু করার। পরিবারের আর্থিক অভাব অনাটনের মধ্যে দিয়ে এইচএসসি পাশ করার পর টিউশন শুরু করি পরে সেই টাকা দিয়ে নিজের পড়ালেখা সহ কিছু টাকা জমিয়ে একটি দেশি জাতের গরু পালান করা শুরু করি। পর্যক্রমে মূলধন বৃদ্ধি পাওয়ায় একটি দুটি থেকে এখন আমার খামারে ৯ টি গরু আছে । তবে বর্তমানে গো খাদ্য সহ অন্যন্য জিনিস পত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মাঝে মধ্যে হিমশিম খেতে হয় । তিনি বলেন সরকারি সহযোগীতা সহ উন্নত প্রশিক্ষণ পেলে খামারটি আরো বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।