সারাদেশ

চিলমারীতে জোর করে জমি দখলের চেষ্টা ও সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

  চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি ২২ মে ২০২৪ , ৭:৩০ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে জোর করে জমি দখলের চেষ্টা ও সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। বুধবার বিকেলে প্রেসক্লাব চিলমারীর কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে মো.বজলুর রহমান লাভলু। লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান,উপজেলার বালাবারিহাট ভাষার ভিটা এলাকার মৃত বসির উদ্দিন তার পিতা। তিনি ১৯৮৪-৮৫ সালে প্রায় ০৭ (সাত) শতাংশ জমি দলিল মূলে ক্রয় করে আরএস রেকর্ডভূক্ত করান। যাহার এসএ খতিয়ান নং- ৯৭১, এসএ দাগ নং- ১০৬, আরএস খতিয়ান নং- ৯৯, দাগ নং- ১১৮ এবং খাজনাও পরিশোধ করা হয়। একই এলাকার ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী বাহিনী নুর মোহাম্মদ ও তাহার ছেলে- মোঃ ফজলুল হক (আলটু), স্ত্রী- মোছাঃ বকুল বেগম (বোনো) সহ পরিবারের সকলে মিলে তাহার বাড়ীর পাশে জমি হওয়ায় বারবার দখলের চেষ্টা করে। আমার পিতা বসির উদ্দিন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে কোর্টের সরণাপন্ন হয়ে ৩/২০০২ইং কুড়িগ্রাম বিজ্ঞ জর্জ আদালত মামলা করে এই মামলার রায়ের প্রেক্ষিতে ২৪/০৮/২০২৩ইং তারিখে বিজ্ঞ যুগ্ম জর্জ আদালত ০১ (এক) সেট দখলি পরওয়ানা বিজ্ঞ সিভিল কোর্ট কমিশনার, পুলিশ ফোর্সের সহায়তায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বিজ্ঞ সিভিল কোর্ট কমিশনার মোঃ আক্তারুজ্জামান ঢাক-ঢোল পিটিয়ে উপস্থিত জনতার সম্মুখে জমির চারিকোনায় ও মাঝখানে লাল পতাকাযুক্ত খুটি দ্বারা দখল বুঝাইয়া দেয়। ঐ জমিতে আমার টিন দিয়া ঘেরাও করে বাড়ী করার উদ্দেশ্যে গাছপালা রোপন করি। নুর মোহাম্মদ গং বেড়ার কিছু টিন চুরি করে এবং রোপনকৃত গাছপালা বিনষ্ট করতে থাকে। নূর মোহাম্মদ গত ১৯/০৯/২০২৩ইং তারিখে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, কুড়িগ্রাম এ ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৪৪ ধারায় একটি দরখাস্ত করে। যাহার কেস নং- ৬২৩/২৩ইং (চিল)। এই মামলাটি ৩১/১২/২০২৩ইং তারিখে আমাদের পক্ষে রায় প্রদান করেন। এরপরও আমরা গ্রামবাসীকে সম্মান প্রদর্শন পূর্বক তাদেরকে অবহিত করি। ঐ ভূমিদস্যুরা গ্রাম্য গণ্যমান্য ব্যক্তিকে তোয়াক্কা না করে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়। গত ১৭/০৫/২০২৪ইং তারিখে ঐ জমি পরিচর্যা ও বেড়া সংস্কার করতে গিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী- নুর মোহাম্মদ, মোছাঃ বকুল বেগম (বোনো), মোঃ ফজলুল হক (আলটু), মোঃ মাইদুল ইসলাম, মোঃ মাজেদুল ইসলাম, মোছাঃ পারুল বেগম ও মোছাঃ রোকাইয়া বেগম ইসলাম পরিকল্পিতভাবে দেশীয় ধারালো অস্ত্র-সন্ত্রসহ আমাদের শরীরে জখম করে এবং এসিড মিশ্রিত গরম পানি মগ ও বালতি দিয়ে শরীরে নিক্ষেপ ও ঢেলে দেয়। আমার চাচাতো ভাই মোঃ মুকুল মিয়া এগিয়ে আসলে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় ধারালো ছোরা দিয়ে চোট মারিলে উক্ত চোট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে কানে লাগিয়া ২/৩ অংশ ঝুলে যায় এবং ডান হাতে কোপ দিলে কনুই ও কব্জির মাঝে গুরুতর কাটা জখম হয় এবং ভেইন পর্যন্ত কেটে যায়। চিলমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ আনা হলে অবস্থার বেগতিক দেখে কুড়িগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স- এ রেফার্ট করে। আমার ভাবী মোছাঃ সাহেরা বেগমকে এসিড মিশ্রিত গরম পানি নিক্ষেপ ও ঢেলে দেওয়ায় জীবন সংকটাপন্ন হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। আমার ছোট ভাই মোঃ গোলাম মোস্তফাকে চোখে-মুখে এসিড মিশ্রিত গরম পানি মুখের উপরে মেরে ঝলসে দেয় এবং আমার ভগ্নিপতি মোঃ সুরুজ্জামানের শরীরে এসিড মিশ্রিত গরম পানি ঢেলে শরীর ঝলসে দেয়। আমার ভাবী নাজমা বেগমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে চোট মেরে বাম হাতের কব্জির উপরে গুরুতর জখম করে। আমি চিলমারী মডেল থানায় এসিড মিশ্রিত গরম পানি নিক্ষেপের এজাহার করতে গেলে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এজাহার গ্রহন করেনি। তখন আমার মামলার অভিজ্ঞতা না থাকায় এবং মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ায় থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পরামর্শে শুধু গরম পানি (মরিচের গুড়া মিশ্রিত) নিক্ষেপের মামলা করি। এমতাবস্থায় মামলার আসামী ০৪ (চার) জন জামিনে এসে তারাসহ অন্যান্য আসামীগণ এলাকায় বিভিন্নভাবে মেরে ফেলার হুমকি দিতেছে। ফলে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট হইতেছে। এলাকাবাসী, গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং আমার পরিবারের সদস্যগণ এর তীব্র প্রতিবাদ ও এজাহারটি সংশোধনসহ এসিড নিক্ষেপের মামলা গ্রহনের জন্য থানায় অনুরোধ করা হলেও তা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে আসামীগণ প্রকাশ্য বাহিরে ঘুরে বেড়ায় আমরা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি।