বিবিধ

রৌমারীতে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত ৩০ হাজার মানুষ

  স্টাফ রিপোর্টার: ৯ জুন ২০২৪ , ১২:৩৬ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবন ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত বন্দবেড় ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডের গ্রামীণ জনপদের প্রায় ৩০ হাজার সাধারণ মানুষ। মাঝে মধ্যে অন্যের বাড়িতে থেকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে। এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, সমন্বয় সভায় আলোচনাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন দিলেও এখন পর্যন্ত কার্যকরি কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

রবিবার উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের কুটিরচর কমিউনিটি ক্লিনিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবনের মূল ফটকে ঝুঁলছে তালা।
স্থানীয়রা বলছেন, নি¤œমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ভবনটি নির্মাণ করায় কিছু দিনের মধ্যেই মাটির নিচে কিছু অংশ ডেবে যায়। এছাড়াও ভবনের ছাদ থেকেও বৃষ্টির পানি চুয়ে পড়ে। এ ক্লিনিকে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার (সিএইচসিপি) আনোয়ার হোসেন ভবনের ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন এর বাড়ি থেকে ঢিলেঢালা ভাবে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে। তবে তার সহযোগি স্বাস্থ্য সহকারি (এইচএ), পরিবার পরিকল্পনা সহকারি (এফডাব্লিউ এ) কর্মরত ২ জনই অনুপস্থিত থাকেন। বন্দবেড় ইউনিয়নের চরবন্দবেড় (কুটিরচর) গ্রামে ১৯৯৮ সালে কমিউনিটি ক্লিনিকটি স্থাপিত হয়। এখানে ৩ টি ওয়ার্ডেও চরবন্দবেড়, ফলুয়ার চর, কুটির চর, খানপাড়া, বন্দবেড় গ্রামসহ ১৫ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ চিকিৎসা সেবা নেন। প্রতিদিন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন শিশু, বয়স্ক, গর্ভবতী মা সহ শতশত মানুষ।

বন্দবেড় গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা সাজেদা বেগম (৪৮) বলেন, পাকা ঘর থাইকা সব ওষুধ চেয়ারম্যানের বাড়িত নিছে। ওডাই থেকে আমাদের ওষুধ দেয়। ঝড়ি হলে বিল্ডিংয়ের ভিতর পানি পড়ে।

এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, “শেখ হাসিনার অবদান, কমিউনিটি ক্লিনিক বাচাঁয় প্রাণ” ১৯৯৮ সালে প্রথমধাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হলে এ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে পর্যাক্রমে ৩২টি কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম শুরু হয়।

কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বরত সিএইচসিপি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ক্লিনিক শুক্রবার সরকারি ছুটি ছাড়া প্রতিদিনই খোলা থাকে। তবে অন্যের বাড়ি থেকে সেবা প্রদান করা হয়। ক্লিনিকের ভবনটি নির্মাণের পরেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ছাদ থেকে বৃষ্টির পানি ঝড়ে। ভবনের বিভিন্ন স্থানে ধ্বসে পড়ছে। যে কোন মুহৃর্তে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে অবগত করা হলে, তারা সরেজমিনে পরিদর্শন করে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষনা করেন। এছাড়াও আশপাশের জমির মালিকরা তাদের জমিতে মাটি ভরাট করায় ক্লিনিকের ভবনটি মাটির নিচে পড়ে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আক্কাছ আলী বলেন,নিম্ন কাজ হওয়ায় ভবনটি অল্প দিনেই নষ্ট হয়ে গেছে। এবিষয়ে আমি সাবেক মন্ত্রীমহোদয়কে জানাইছি,কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তবে গ্রামের সচেতন মহলের সিদ্ধান্তে আপাতত কবীর চেয়ারম্যানের বাড়ির একটি রুম থেকে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে। ভবনটি নতুন করে নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে জোরদাবী করছি।

এ সর্ম্পকে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান বলেন, ভবনটি ঝুকিপূর্ন হওয়ায় আপাতত স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধির বাড়ির একটি রুম থেকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে। এবিষয়ে সমন্বয় সভায় আলোচনা করা হয়েছে। তবে এটা একটা বড় সমস্যা। এ বিষয় উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের একাধিকবার অবহিত করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পটি গ্রামীন জনপদের সাধারণ মানুষের দ্বার প্রান্তে স্বাস্থ্য সেবা পৌছে দেওয়ার এটি একটি যুগান্তকারি পদক্ষেপ। ভবনটি পরিত্যক্ত হওয়ায় স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া বড় সমস্যা হচ্ছে। এনিয়ে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।