রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি ২৫ জুন ২০২৪ , ৪:২৯ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামে রাস্তা না থাকায় বিপাকে গ্রামবাসি, বর্ষাকালে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। গ্রামবাসি,শিক্ষার্থী,ব্যবসায়ী,চাকুরিজীবি,কৃষক,শ্রমিক, বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারসহ দৈনিক প্রায় ১০ হাজার মানুষ চলাচল করে এই রাস্তা দিয়ে। মঙ্গলবার ২৫ জুন উপজেলার রতনপুর, চর বামনেরচর পূর্বপাড়া ও খাটিয়ামারী এই তিন গ্রামবাসীসহ সাধারন মানুষের চলাচলের চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে বলে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে।
জানা গেছে, মাত্র দেও থেকে দুই কিলোমিটার সড়ক না থাকায় ফসলি জমির আইল সরু রাস্তা দিয়ে দীর্ঘদিন থেকে যাতায়াত করছেন এলাকাবাসি। ফসল উৎপাদনে ধান রোপনের সময় কাদা মাখা জমির সুরু রাস্তা দিয়ে চরম দুর্ভোগে উপায় না পেয়ে উপজেলা শহরের যাতায়াত করতে হয়। অপর দিকে বর্ষাকালে দুর্ভোগের আর শেষ থাকে না, কৃষি নির্ভর এই গ্রামের মানুষের উৎপাদিত কৃষিপণ্য উপজেলা সদর ও বিভিন্ন হাট বাজারে পৌঁছাতে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে এবং রোগীদের হাসপাতালে দ্রুত পৌঁছাতে, বাড়িতে আগুন লাগলে দ্রুত ফায়ার সার্ভিস ঘটনা স্থালে পৌঁছাতে পারে না এমন দুর্ভোগ নিত্য দিনের সঙ্গী।
গুছ গ্রাম তুরা রোড থেকে সোজাপূর্ব দিকে রোডের রতনপুর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলীর বাড়ীর পাশদিয়ে ঈদগাঁহ মাঠ হয়ে রতনপুর কবরস্থান বাইতুল হামদ নূরানী ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার পরে পাকা রাস্তা পর্যন্ত প্রায় ১.৫ কিলোমিটার রাস্তার চরম দুর্ভোগ। এই রাস্তা দিয়ে ভ্যান গাড়ী অটো চলাচলের জন্য প্রশস্ত ১০ ফুট চওড়া ও ৫ ফুট উঁচু) করে রাস্তাটি নির্মাণ করা বিশেষ প্রয়োজন বলে দাবি করেন এলাকাবাসি। বর্তমানে গ্রামবাসী পায়ে হেঁটে কোন রকম সরু রাস্তা দিয়ে ফসলি জমির আইল ঘেষে কষ্ট করে যাতায়াত করছে। এছাড়া অত্র এলাকার অনেক শিক্ষার্থীকে স্কুল-কলেজে যাতায়াত করতে হয় পায়ে হেঁটে। এদিকে মুমূর্ষ রোগীদের জন্য এই রাস্তা যেন মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এসব দুর্ভোগ প্রতিনিয়ত পোহাতে হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন রৌমারী সদর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম। স্থানীয় এলাকাবাসি ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার রাস্তাটি চলাচলের সু-ব্যবস্থা করার জন্য কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড.বিপ্লব হাসান পলাশ এমপিসহ বিভিন্ন দপ্তরে দুর্ভোগ লাঘবে রাস্তাটি নির্মাণ করার জন্য জোর দাবি জানান।
স্থানীয় বাসিন্দা ভুক্তভোগী মোহাম্মদ তইনুদ্দিন দেওয়ানী জানান, রাস্তা না থাকায় অনেক কষ্ট করে বাজারে যেতে হয়। ফসলি জমির আইল দিয়ে সারা বছর কষ্ট করে এভাবে চলাচল করতে হয়। এতে সাইকেল, ভ্যান, রিক্সা, এম্বুলেন্স সহ কোন প্রকার যানবাহন চলাচলের সুযোগ নেই।
কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, আমরা ফসল উৎপাদন করি দের কিলোমিটার রাস্তা না থাকায় ভ্যান, রিক্সা ও সাইকেল চলে না। এতে ফসল হাটে পৌঁছাতে অনেক কষ্ট হয়। বর্ষা মৌসুমে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। এই রাস্তাটি নির্মাণের জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মেহেদী হাসান মাসুদ বলেন, রাস্তা না থাকায় দুর্ভোগের বিষয়টি ইতিমধ্যেই সংসদ সদস্য ও জনপ্রতিনিধিদের অবগত করাসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানিয়েছি। আশা করি জনভোগান্তি রোধে সকলের প্রচেষ্টায় রাস্তাটির নির্মাণে আন্তরিক হবেন।
এব্যাপারে রৌমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে জানান, ওই এলাকায় একটা রাস্তা না থাকায় সাধারন মানুষ খুব কষ্টে চলাচল করে। আমি বিভিন্ন ভাবে যোগযোগ করছি যাতে ওই খানে একটা রাস্তা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান জানান, জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।