জাতীয়

৯ম দিনের মতো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলমান

  মারুফ হাসান, রাবি প্রতিনিধি: ৯ জুলাই ২০২৪ , ৩:৪৯ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনকে ‘বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে এটি প্রত্যাহারের দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকাল থেকে ৯ম দিনের মত এই সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন তারা।

বেলা ১১ টার দিকে শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

তাদের দাবিগুলো হলো প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তন করা।

চলমান শিক্ষক আন্দোলন নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ও জনসংযোগ প্রশাসক ড. প্রণব কুমার পাণ্ডে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও চান না আন্দোলন করতে। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে শিক্ষকরা আজ দাবি বাস্তবায়ননের জন্য আন্দোলনে নেমেছে। এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শিক্ষকদের সাথে বসতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার ব্যস্ততার কারণে বসতে পারেনি। আমি বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষকদের পাশে দাঁড়াবেন।”

তিনি আরও বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষকদের বেতন কাঠামোর একটি তুলনামূলক চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনাই বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। এরপরেও যদি প্রত্যয় স্কিমে শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে শিক্ষকতার মতো এ মহান পেশায় মেধাবী শিক্ষার্থীরা আসতে চাইবে না। যেটি জাতির জন্য বিপদজনক বয়ে আনবে। আমাদের সকলের আস্থার জায়গা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আলোচনা করে একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিবেন।”

রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, প্রত্যয় স্কিম থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মুক্ত করা ছাড়া আমাদের এখন আর ঘরে ফেরার কোনো সুযোগ নেই। আজ আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষকদের বিষয়ে যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছিল সেটিকে আমরা মেনে নেয়নি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলমান থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই পারে আমাদের আন্দোলনকে চলমান রাখতে।

তিনি আরও বলেন, ‘ প্রত্যয় স্কিমে ৪০৩ ধরনের শ্রেণি রয়েছে। তারা যেহেতু কোনো আন্দোলন করছে না, সেহেতু আমরা তাদের দায়িত্ব নিতে পারব না। আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি, এই প্রত্যয় স্কিম থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নাম প্রত্যাহার করার জন্য। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল আমাদের এ অবস্থান কর্মসূচিকে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে তারা সফল হবে না। আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাব।

উল্লেখ্য, সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহার এবং পূর্বের পেনশন স্কিম চালু রাখার দাবিতে গত ২০ মে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। তার ধারাবাহিকতায় ২৬ মে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের ৩৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে মানববন্ধন করেন শিক্ষকরা। পরবর্তীতে গত ৩০ জুন পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করা হয় এবং পরবর্তী দিনগুলোতে সর্বাত্মক কর্মবিরতি আহ্বান জানান আন্দোলনরত শিক্ষকরা।#