সারাদেশ

রংপুরে সংখ্যালঘুদের মন্দির ও উপাসনালয়গুলো পাহারা দিচ্ছেন বিএনপির নেতাকর্মী

  রংপুর ব্যুরো ১২ আগস্ট ২০২৪ , ৪:৫৪ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

রংপুর মহানগরী ও জেলার আট উপজেলায় হিন্দু ধর্মালম্বীসহ সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের উপাসনালয়গুলো পাহারা দিচ্ছেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। গত কয়েকদিন ধরে রংপুর মহানগরীসহ জেলার বিভিন্ন মন্দির ও সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের বাড়িঘর পাহারা দিচ্ছেন তারা।
রংপুর মহানগরীর ৬টি থানা ও জেলার আট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হিন্দুসহ সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাটের আংশকায় দিনে ও রাত জেগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে এমন উদ্যাগ নিয়েছেন রংপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক সামসুজ্জামান সামু ও সদস্য সচিব এ্যাড. মাহফুজ উন নবী ডন। একইভাবে রংপুর জেলার নেতৃবৃন্দও পৃথকভাবে এই উদ্যাগ গ্রহণ করেছেন।
এদিকে রংপুর মহানগরীসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু পরিবারদের বাড়ি ও মন্দির রক্ষার জন্য পাহারা দেওয়া হচ্ছে। বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সাধারণ মানুষজনকে সাথে নিয়ে এই দিনে ও রাতে এই পাহারা দিচ্ছে। এতে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। এ ধরনের পাহারার ব্যবস্থা করায় সংখ্যালঘু পরিবারগুলো আনন্দ ও উৎসাহ প্রকাশ করেন। তবে আংতকের কথাও জানান কেউ কেউ।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, রংপুর মহানগরীর পশুরাম, হাজিরহাট, তাজহাট, হারাগাছ, কোতয়ালী, মাহিগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন স্থানের হিন্দু ধর্মালম্বীসহ সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের উপাসনালয়গুলো পাহারা দিচ্ছেন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তারা দিনে ও রাতে পৃথকভাবে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এদিকে রংপুর মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা ইতিমধ্যে রংপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারসহ বিভিন্ন থানার ওসি’র সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করে হিন্দু ধর্মালম্বীসহ সংখ্যালঘু স¤প্রদায় ও সকল ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান। গত শুক্রবার রংপুর মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে এক পৃথক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতৃবৃন্দ নৈরাজ্য সৃষ্টি কারিদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য দল-মত নির্বিশেষে সকলের প্রতি আহŸান জানান। একই সঙ্গে দলীয় কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও ঘোষণা দেন।
রংপুর মহানগর জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সাবেক কাউন্সিলর আরজানা সালেক বলেন, বাংলাদেশ হচ্ছে সম্প্রীতির বাংলাদেশ। এখানে সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে দীর্ঘকাল ধরে বসবাস করছে। সেই দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার লক্ষে একটি চক্র পাঁয়তারা করছে। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সেই পরিস্থিতি প্রতিরোধে মাঠে রয়েছে।
বিএনপির নেতাকর্মীরা বলেন, হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের মন্দির ও বাড়িঘরের পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন স্থাপনার সামনে আমাদের নেতাকর্মীরা নিরাপত্তা দিচ্ছেন। কেন্দ্রীয়ভাবে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আমরা এ দায়িত্ব পালন করে যাব।
এবিষয়ে রংপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক সামসুজ্জামান সামু দেশের চলমান পরিস্থিতিতে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের সব নেতাকর্মীকে সতর্ক থাকার আহŸান জানিয়ে বলেন, রংপুরের কোনো মানুষ নির্যাতিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কোনো ধর্মীয় সংখ্যালঘুর বাড়িঘরে হামলা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লুটপাট ও কোনো মন্দিরে যাতে কেউ অগ্নিসংযোগ করতে না পারে, সেদিক লক্ষ্য রেখে সবাইকে থানা ও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে কাজ করার আহŸান করেন। তিনি আরও বলেন, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কোন নেতাকর্মী যদি এসব কর্মকান্ডে জড়িত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।
অপরদিকে কয়েকদিন ধরে রংপুর মহানগরীসহ জেলার আট উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজ, ইসলামী আন্দোলন ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা যানজট নিরসনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সেই সঙ্গে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায়ও ভ‚মিকা রাখছেন। রংপুরের ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিভিন্ন সংগঠনও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম করছেন।