জহির রায়হান কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধিঃ ১ অক্টোবর ২০২৪ , ৮:৪০ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
রংপুরের কাউনিয়ায় উপজেলায় প্রতিবছর নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে শতশত মানুষ গৃহহারা আর শতশত হেক্টর ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে নিঃশ্ব হচ্ছে। নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে কাউনিয়ার মানচিত্র থেকে শুভাঘাট ও শ্বশনটারী মৌজা দুটি বিলিন হয়েগেছে।
স্বাধীনতার পর থেকেই নদীপাড়ের মানুষ নদী খননের দাবী করে আসলেও কোন সরকারই তা কর্ণপাত করেনি।সরেজমিনে তিস্তা নদী এলাকা ঘুরে দেখাগেছে, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি ইউনিয়নই নদী ভাঙ্গনের শিকার। কাউনিয়ায় গত শুক্রবার রাত থেকে ভারতের ছেরে দেয়া পানি আর বৃষ্টির পানিতে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা কবলিত হয়েপরে নদী তীরবর্তি ১০টি গ্রাম। গত রবিবার রাত থেকে পানি কমতে শুরু করলেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতো মধ্যে চরগনাই গ্রামের ১০টি বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে তারা হলেন নজরুল ইসলাম পিতাঃ মৃত ফয়েজ উদ্দিন,আব্দুস সালাম পিং গণি মন্ডল, জলিল মিয়া পিং গণি মন্ডল ,আক্তারুল ইসলাম পিং আব্দুস সালাম মন্ডল, আজগার আলী পিং মানুশেখ,সুজন মিয়া পিং আজগার আলী,আবু সাঈদ পিং আজগার আলী,তাহের আলী পিং আব্দুল কাফি,রহিছ মন্ডল পিং ছারফুল।আরও ১২টি বাড়ি নদীগর্ভে যাওয়ার পথে। এভাবেই প্রতিবছর ফসলি জমি আর বাড়ি-ঘর তিস্তা নদী গিলে খাচ্ছে। চরগনাই গ্রামের নজরুল ইসলাম জানান, নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিমিশেই তারসহ ১০টি বাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে। এ অস্থায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তিস্তা নদী পাড়ের বাসিন্দারা। গদাই গ্রামের আবুল হোসেন জানান, নদীর পানি কমার সাথে সাথে বাড়বে নদী ভাঙ্গন, এবারও হয়তো ফসলি জমি নদীর পেটে চলে যাবে, এ নিয়ে চিন্তায় আছি। হঠাৎ বন্যায় নদী তীরবর্তী এলাকার উঠতি ধান, বীজ বাদাম, মরিচসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়েগেছে। অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েন। ডুবে যায় কৃষকের ফসল, ভেসে যায় পুকুরের মাছ। ঢুসমারা চরে বাসিন্দা কোব্বাত আলী জানান, শুধু শুনি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে কিন্তু হয় না। টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম জানান, তার এলাকায় ১০টি বাড়ি নদীতে বিলিন হয়েগেছে, যে হারে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে তাতে করে আরও শতশত বাড়ি নদী গর্ভে চলে যেতে পারে। তিস্তা নদী ড্রেজিং করা না হলে এই ভাঙ্গন কোন ভাবেই ঠেকান যাবে না। ডালিয়া পাউবোর উপ-প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন বলেন, উজানের ঢল আর বর্ষণে তিস্তায় পানি বেড়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছিল, এখন পানি কমতে শুরু করেছে। বন্যা ও ভাঙ্গন কবলিত এলাকা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিদুল হক, জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আহসান হাবীব সরকার, ইউপি চেয়ারম্যানগণ পরিদর্শন করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, তিস্তা নদী এলাকায় বন্যা ও ভাঙ্গনের বিষয়ে আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখছি। কোথাও কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।