এস এম রাফি ১২ এপ্রিল ২০২৩ , ২:৪৫ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
এস এম রাফি, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে জমে উঠেছে কুড়িগ্রামের চিলমারীর কাপড়ের বাজার গুলো। প্রতিটি পোষাকের দাম বাড়লেও আশানুরুপ বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কাপড় ব্যবসায়ীরা। গত বছরের ঈদ বাজারের থেকে এ বছর বাজারে আগাম বাড়তে শুরু করেছে ক্রেতার সংখ্যা। গেলো ঈদ বাজারের তুলনায় এ বছর বেচা বিক্রিও বেশি হবে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তবে কাপড় কিনতে আশা ক্রেতারা বলছেন, প্রতিটি কাপড়ের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ঈদকে ঘিরে কাপড় কিনতে হবে বলেই চড়া মূল্যে কাপড় সংগ্রহ করছেন তারা।
উপজেলা সদরের বড় কাপড়ের বাজার হচ্ছে থানাহাট বাজার। এ বাজারে প্রায় অর্ধশতাধিক কাপড়ের দোকান রয়েছে। আশপাশের কয়েক স্থানে কাপড়ের দোকান থাকলেও সেসব স্থানে জনসমাগম কম হয়। এর কারণ হিসেবে থানাহাট বাজারে দোকানে সংখ্যা বেশি হওয়ায় ক্রেতারা তাদের পছন্দ মতো পোষাক কিনতে পারেন। তাই বলা যায় থানাহাট বাজারটি এ উপজেলার মানুষের কেন্দ্রীয় কাপড় বাজার।
থানাহাট বাজারে গেলে সাধারণ ক্রেতার সমাগম চোখে পড়ার মত অবস্থা দেখা যায়। প্রায় সব দোকনের ফটকে ভীড় জমতে শুরু করেছে। ঈদ যত সন্নিকটে আসছে ক্রেতার সংখ্যা ততই বাড়তে শুরু করেছে। বাজারে পুরুষের তুলনায় নারী ও শিশুর সংখ্যা বেশি। ব্যস্ত সময় পাড় করতে দেখা গেছে দোকান মালিক ও বিক্রয়কর্মীদের। সকাল ১০টার পর দোকান পাট খুলে রাত ১২টা ১টা পর্যন্ত চলে বেচা বিক্রি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রমজান মাসের শুরু দিকে ক্রেতার সংখ্যা কম থাকলেও তা প্রতিদিন ক্রমান্বয়ে এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রথমের দিকে ক্রেতা শূণ্য অবস্থায় থাকলেও গেলো ১৫ রমজানের পর এর চিত্র একেবারেই আলাদা অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছে, চাঁদ রাত পর্যন্ত এখন ক্রেতারা ভীড় করতে থাকবে তাদের পছন্দের কাপড় কিনতে। প্রতিটি কাপড়ের দাম বেড়েছে গড়ে ১০০ থেকে ২০০টাকা । আবার কোন কোন কাপড়ে দাম বেড়েছে ৭০ থেকে ৮০টাকা বলে জানা গেছে।
ঈদ উপলক্ষে কাপড় কিনতে থানাহাট বাজারে এসেছেন তাহের আলী ও তার স্ত্রী সাথে এসেছে তাদের ছোট একটি মেয়ে। এই দম্পত্তি থানাহাট ইউনিয়নের ডেমনাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তারা তাদের পছন্দের কাপড় নেড়েচেড়ে দেখেছেন। ছোট মেয়েটির জন্য কিনেছে একটি জামা। এসময় কথা হলে তারা জানান, তাদের মেয়ের আবদার পূরণ করতে ঈদের কেনা কাটা করতে বাজারে এসেছেন। প্রতিটি কাপড়ের দাম বেড়েছে বলে জানান এই দম্পতি। গত ঈদে যে শাড়ি কিনেছেন ৬-৭’শ টাকা মধ্যে এবার তার দাম বেড়ে ২ থেকে ৩’শ টাকা। তারপরেও দ্বিধাহীনভাবে নিজেদের পরিবারের জন্য কাপড় কিনেছে।
রমনা মডেল ইউনিয়নের হাজিপাড়া এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল হক দুদিন আগে নিজের জন্য পান্জাবী ও একটি শার্ট কিনেছেন। আজ এসেছে মেয়ে ও স্ত্রীর জন্য নতুন কাপড় কিনতে । তিনি বলেন, কাপড়-চোপড়ের দাম বেড়েছে। কিন্তু তারপরেও কিনতে হচ্ছে। আয় রোজগার তো বাড়েনি আগের মতই আছে। কিন্তু কাপড়ের দাম ঠিকই বেড়েছে। ঈদের সময় ভীড় জমে সাচ্ছন্দ্যভাবে কাপড় নিতে সমস্যা হয়। তাই ঈদের কয়েকদিন আগেই কাপড় কিনতে আসছি।
কাপড় বিক্রিতে ব্যস্ত সৌরভ কালেকশনে বিক্রয়কর্মী নাকিব হাসান। তিনি জানান, শুধুমাত্র ঈদের এই সময়টাতে দোকানে থেকে তার চাচাকে সাহায্য করেন। কারণ এমনি সময়ের তুলনায় রমজান মাসে শেষের দিন গুলো ক্রেতার চাপ বেড়ে যায়। দোকানে কর্মী কম হলে ক্রেতাদের পছন্দ মতো কাপড় দেখানোয় ভোগান্তি হয়। তাই এই সময়টাতে তিনি দোকানে কাপড় বিক্রি করেন বলে যোগ করেন তিনি।
সৌরভ কালেকশনের মালিক ও স্থানীয় কাপড় ব্যবসায়ী মো. আক্কাস আলী বলেন, গেলো বছরের তুলনায় এবার ক্রেতার সংখ্যা বেশি। দিন দিন ক্রেতার সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে। আর এবার প্রতিটি কাপড়ের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরেও বেচা কেনা ভালোই হচ্ছে। ঈদের বাজার কে ঘিরে চিলমারীর প্রেক্ষাপটেও প্রতিটি দোকানে গড়ে ১৫ থেকে ২০লাখ টাকার কাপড় বিক্রি হবে বলে তিনি ধারণা করছেন।