বিবিধ

টিউশনির টাকায় অনুশীলনে জেলায় যেতেন মেহেদী, স্বপ্ন এখন জাতীয় দলে খেলার

  এস এম রাফি ১৮ জুলাই ২০২৩ , ৫:০১ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

এস এম রাফি, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ

পরিবারের অভাব অনটনের কারণে টিউশনি করিয়ে প্রতিদিন ৩০কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ক্রিকেট অনুশীলন করতে মেহেদী যেতেন জেলা স্টেডিয়াম মাঠে। অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর পরিশ্রমের ফলে এ বছর সুযোগ হয়েছে ঢাকা প্রথম বিভাগ ক্রিকেট দলে।
মেহেদী হাসানের বাড়ি কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায়। তিনি রমনা মডেল ইউনিয়নের জোড়গাছ মন্ডলপাড়া এলাকার মো. নুর ইসলামের ছেলে। তার বাবা চালের ব্যবসা করতেন। বর্তমানে অসুস্থ্য থাকায় বাড়ি আছেন।
মেহেদী ছোট বেলা থেকেই ক্রিকেট ভক্ত ছিলেন। এরপর তিনি এসএসসি পরিক্ষার পর ক্রিকেটের প্রতি আশক্ত হয়ে পড়েন। তারপর শুরু করেন বিভিন্ন অনুশীলন। তবে বাবার আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় তার ওপরে ওঠার পথটা ছিল ভিন্ন।
অদম্য এই ক্রিকেটার ২০১৭ সালে রংপুর রাইডার্স পেসার হান্টে এক হাজার জনের মধ্যে ৫ম হয়ে কুড়িগ্রাম জেলা দলে অনুর্ধ্ব-১৮ তে সুযোগ পান। এরপরই তার অক্লান্ত পরিশ্রমে শুরু হয় নতুন এক ক্যারিয়ার। জেলায় ভালো পারফামেন্স করে জায়গা করে নেন রংপুর বিভাগে। এরপর বিভাগীয় পর্যায়ে ৫ম্যাচ খেলে তুলে নেন ১৪ উইকেট। সেসময়টা বিভাগীয় দলে ছিল বেশ আলোচনায়। তারপর তাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ক্যারিয়ার পরের অর্জন ছিলো জাতীয় পর্যায়ে অনুর্ধ্ব-১৯ এ।
পরবর্তীতে গেল বছরে ঢাকা লীগে শুলশান ক্রিকেট ক্লাবে সুযোগ হয় খেলার। এসময় ওই লীগে দুর্দান্ত খেলেন।
মেহেদী ক্যারিয়ারে গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে ১৬ ম্যাচ খেলে ৪৩ উইকেট শিকার এবং ব্যাট হাতে ১৫৬ রান, এবং টানা ৮ টি ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ। যা ঢাকা লীগে খুবই বিরল। এ বছর ঢাকা প্রথম বিভাগের হয়ে খেলবেন এই তারকা।
মেহেদী হাসান বলেন, ছোট বেলা থেকেই ক্রিকেট খেলার প্রতি ছিলো আগ্রহ। এরপর থেকেই গ্রামের মাঠে প্রতিনিয়ত খেলতেন ক্রিকেট। তবে এসএসসি পরিক্ষার পর পুরোদমে খেলায় অংশগ্রহণ করেন। তারপর থেকেই ক্রিকেট খেলায় ক্যারিয়ার শুরু হয়।
তবে তিনি আরও বলেন, আর্থিক অসচ্ছলতার পরিবার থেকে ক্রিকেট খেলা টা ছিলো অনেক কষ্টের। বাবার ছিলো ছোট ব্যবসা যা দিয়ে সংসার টা চলত। কিন্তু ক্রিকেট অনুশীলন করতে যেতে হত জেলায়। প্রতিদিন যাতায়াত খরচ দেয়াও সম্ভব ছিলো না। এরপর আমি টিউশনি করে যাতায়াতের খরচ যোগিয়েছি। টিউশনি করিয়ে প্রতিদিন ৩০কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ক্রিকেট অনুশীলন করতে জেলা স্টেডিয়াম মাঠে যেতাম। এবছর ঢাকা প্রথম বিভাগের হয়ে খেলব।