বিনোদন

সিনেমা কারখানা কারও একক মালিকানাধীন নয়

  এস এম রাফি ২ আগস্ট ২০২৩ , ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

গেল ঈদে কোরবানি ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমা দিয়ে ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দায় জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশোর অভিষেক ঘটেছে। নিশোর প্রথম সিনেমায় সাফল্যের মুখ দেখায় অনেক ভক্ত-অনুরাগীরাই ছোট পর্দার তারকাদের বড় পর্দায় অভিনয় প্রসঙ্গে তর্কে জড়িয়েছেন।

এমনকি এক সাক্ষাৎকারে আফরান নিশো বলেছেন- অনেকেই মনে করেন, ছোট পর্দার অভিনেতাদের টিকিট কেটে বড় পর্দায় দেখতে যান না দর্শকরা। তিনি সেই ধারণা ভেঙেছেন।

এছাড়াও নিশোর ভাষ্য, তার কাছে বাংলাদেশের সুপারস্টার হলো গোলাম মুস্তাফা, হুমায়ুন ফরীদির মতো অভিনেতারা। যেই বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

এবার এ প্রসঙ্গে দীর্ঘ এক ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন অভিনেত্রী বন্যা মির্জা। তার সাফ বক্তব্য, ‘গোলাম মুস্তাফা সুপারস্টার তো ছিলেন বটেই, এমনকি খলিলও ছিলেন। নায়কদের মধ্যে কেবল না, তখন সুপারস্টার ছিলেন খলনায়ক, কৌতুক অভিনেতা, প্লেব্যাক সিঙ্গার, এমনকি চিত্রগ্রাহকের মধ্যেও। বুঝতে অসুবিধা হলে বেবি ইসলামদের মতো মানুষের নাম মনে করুন। জিজ্ঞাসা করুন পুরানদের। ঢাকার কালচারের অভিজাত ছিলেন এরা সকলেই। এবং অভিজাতরাও সিনেমায় যেতেন এদেরই কারণে।’

বন্যার ভাষ্য, ‘বাংলাদেশের বড় পর্দা ছোট হয়ে যেত বহু আগে, যদি ছোট পর্দা থেকে নির্মাতা আর অভিনেতারা এসে কাজ না করতেন। অভিনয় মানের কোনও মিনিমাম প্রতিযোগিতা থাকতো না তাহলে। কয়েকজন মানুষকে নিয়ে কোনও কারখানা চলে না। আর চলে না বলেই ভিন্ন দেশ থেকে লোকজন ধার করতে হয়।’

বন্যা মির্জা বলেন, ‘বাংলাদেশের সিনেমা চাঙ্গা হতে ছোট পর্দার নির্মাতা ও অভিনেতার দরকার হয়েছে। আর তাছাড়া চলচ্চিত্র একটা বড় মাধ্যম। এতে একটা কোনও নির্দিষ্ট ব্যাকগ্রাউন্ডের লোক কাজ করেন না। কোনও দেশেই। থিয়েটার, মিউজিক, লিটারেচার থেকে তো আসেনই; আসেন টিভি, রেডিও থেকেও। আর এটাই হলো সিনেমার ইতিহাস। মনে হয় ইতিহাসটা সকলেই ভুলতে বসেছেন। আবোল-তাবোল সব তর্ক করলে তো ইতিহাস বদলাবে না, গায়ের জোর দেখানো হবে।’

সিনেমা কারখানা কারও একক মালিকানাধীন নয় দাবি করে এই অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘সো কলড কাটপিস (শব্দটা খুব খারাপ যদিও) দিয়ে যখন সিনেমা কোনও মতে চলে, হল সব যখন বন্ধ হতে শুরু করেছে, তখন সেই কারখানা যতটুকু দাঁড়ালো তা ছোট পর্দার নির্মাতা আর অভিনেতাদের হাত ধরে। কেউ এটা অস্বীকার করলে কিছুমাত্র যাবে আসবে না। সময়টার দিকে ঘুরে দাঁড়ালে এটাই বোঝা যাবে। ঠিক তেমনি করেই যারা ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম নির্মাণ করেন, তাদেরও অবদান আছে। সিনেমা কারখানা কারও একক মালিকানাধীন নয়।’

অভিনেত্রী লিখেছেন, “এটাও বলতে চাই যে ‘অশ্লীল’ শব্দটা শুনতেই বেঠিক লাগে কানে। বিশেষ করে যখন নায়িকাদের বা নারী অভিনেতাদের নামের সাথে বলা হয়। সব কিছুর সীমা থাকা উচিত! যাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, তারা সম্পূর্ণ নির্দোষ। কারণ এটা করেছেন বাংলাদেশের সিনেমা নির্মাতারা। যারা পর্দাতে এসেছেন তাদের কোনও ত্রুটি নেই। তারা কেবল কাজ করেছেন। তারা ম্যানুপুলেটেড হয়েছেন। নিরুপায় হয়ে কাজ করেছেন। তাদের নামের সাথে এই সব ট্যাগ করা বিশেষণ আরও একবার ম্যানিপুলেশন, এবিউজ। সিনেমা কারখানা যেহেতু পুরুষের দখলে, তাই নারীদের কোনও দায়ভার নেই।”