জাতীয়

নির্বাচনী সমঝোতার তিন ফর্মুলা

  এস এম রাফি ১১ অক্টোবর ২০২৩ , ৯:২৮ পূর্বাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

মার্কিন প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। যদিও তারা বলছেন, তারা রাজনৈতিক কোনো সমঝোতা করতে আসেননি। সকলের মনোভাব জানতে এসেছেন।
 আগামী নির্বাচন সম্পর্কে সবার ধারণা কি তা উপলব্ধি করতে এসেছেন। তবে এই পর্যবেক্ষক দলের সফরে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের অবস্থান খোলাসা করছে এবং এর মধ্য দিয়ে প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল সমঝোতার কিছু পথ দৃশ্যমান দেখতে পাচ্ছেন বলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন, গতকাল আওয়ামী লীগ-বিএনপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকের মধ্যে দিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সমঝোতার তিনটি পথ খুঁজে পাওয়া গেছে। এই তিনটি পথ হলঃ
১. আলাপ-আলোচনা:
          রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনও আলাপ-আলোচনার সুযোগ রয়েছে। বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ দুইটি রাজনৈতিক দলই প্রকারন্তে পরস্পরকে দোষারোপ করেছে।
তারা বলেছে যে প্রতিপক্ষরাই সমঝোতার পথ বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু কার্যত এখনও একটি সমঝোতার পথ রয়েছে। একারণেই মার্কিন প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের বক্তব্যের আলোকে একটি নির্বাচনী সমঝোতার প্রধান এবং অন্যতম উপায় হলো আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি উভয় দলের মধ্যে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা এবং আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে তারা যদি একটি রাজনৈতিক সংকটের সমাধান করতে পারে এবং এই বিষয়টি মার্কিন পর্যবেক্ষক দলের সবচেয়ে বড় উপলব্ধি বলে জানা গেছে।
২. তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে সমঝোতার চেষ্টা: 
আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দুইটি দলের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে দুই পক্ষের কেউই একে অন্যকে বিশ্বাস করতে পারে না।
আর এই কারণেই তারা মনে করে যে রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য একটি তৃতীয় পক্ষ প্রয়োজন। তবে মার্কিন প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে তারা এধরনের সমঝোতার মধ্যস্থতা করবে না।
 কিন্তু মধ্যস্থতা কারা করবে? বা কিভাবে করবে? সেটি হল দেখার বিষয় এবং  তৃতীয় পক্ষ যদি কোন মধ্যস্থতা করে সেটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে বিবেচিত হতে পারে।
এই তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্ততা করতে পারে কূটনৈতিক মহল। জাতিসংঘের কোনো তত্ত্বাবধায়ক বা অন্য কোনো ব্যক্তি। তবে বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রধান দুই দলকে রাজনৈতিক সমঝোতায় নিয়ে আসা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল এই বিষয়টির ব্যাপারেও নিশ্চিত হয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে তারা বুঝতে পেরেছেন যে এখানে এমন একটি মধ্যস্থতাকারী তৃতীয় পক্ষ দরকার যারা উভয় দলের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং উভয় দলের যাদের ওপর আস্থা রয়েছে।
এক্ষেত্রে যেকোনো বিদেশি কূটনীতিক বা কোনো রাষ্ট্র এই সমঝোতার উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন।
৩. রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে সমঝোতার উদ্যোগ:
প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল যে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলেছেন সেখান থেকে তারা রাজনৈতিক দলগুলোকে রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে একটি সমঝোতার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য প্রস্তাব দিতে পারেন।
 কারণ রাষ্ট্রপতি যেহেতু একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তি এবং তিনি সাংবিধানিক ভাবে জাতির অভিভাবক। এই কারণে তার নেতৃত্বে এ ধরনের একটি সমঝোতার উদ্যোগ হতেই পারে।
তবে তাদের সফরের পরেই বোঝা যাবে যে আসলে সমঝোতার জন্য তারা কোনো প্রস্তাব বা পরামর্শ দিচ্ছেন কিনা বা দেবেন কিনা।