এস এম রাফি ১৭ অক্টোবর ২০২৩ , ৮:৫৫ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
ঢাকার নবাবগঞ্জে আওয়ামীলীগ নেতার অপকর্ম ঢাকতে এক যুবলীগ নেতাকে নিয়ম বর্হিভূতভাবে বহিষ্কার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গঠনতন্ত্রের কোন নিয়ম না মেনেই বহিষ্কার করা হয়েছে বারুয়াখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি মোঃ রাশেদ খানকে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ব্যক্তি স্বার্থে যুবলীগ নেতাকে বহিষ্কারে ক্ষোভে ফুঁসছে যুবলীগের অন্যান্য সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, উপজেলার বারুয়াখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি মোশাররফ মোল্লা ও তার স্থানীয় ভূমি খেকো চক্রের মন রক্ষা করতে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুর আলম। যেখানে স্বাক্ষর করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি /সাধারণ সম্পাদক। তবে বিষয়টি জানেন না থানা যুবলীগ সভাপতি মোঃ সারোয়ার খান সারোয়ার। বারুয়াখালী ইউনিয়ন আওয়ামী সভাপতি মোঃ মোশাররফ মোল্লার নেতৃত্বে দলিল লিখক পলাশ সরদার, রানা ইসলাম, মোঃ ওমড় ফারুকসহ একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন এলাকায় চাঁদাবাজি, ভূমি দখলসহ নানা অপকর্মে জড়িত।মোশাররফ মোল্লার আপন বড় ভাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠে অপরাধ চক্রটি। অর্পিত সম্পত্তির ভোয়া কাগজ পত্র সৃজন পূর্বক সাধারণ মানুষের নিকট বিক্রির পায়তারায় লিপ্ত হয়ে মোঃ রাশেদ খানকে দলিল লিখতে বলায় তিনি অপারগতা প্রকাশ করলে তার বাড়ি ঘরে দফায় দফায় হামলা করা হয়। ভেকু দিয়ে জোর -জবস্তি ঘুরিয়ে দেওয়া হয় তার ঘর,গাছ পালা।রাশেদকে হত্যা করার প্রকাশ্য হুমকিসহ একের পর এক হামলা করেও তাদের আক্রোশ না মিটায় অন্যায়ভাবে রাশেদ খানকে যুবলীগের পদ হতে অব্যহৃতি দেওয়া হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বারুয়াখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মোশাররফ মোল্লা নিজ সন্তানের চিকিৎসার কথা বলে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা চেয়ে না পেয়ে সন্ত্রাসী দিয়ে গত ১২ জুন রাশেদ খানের বাড়ির নির্মান কাজ বন্ধ করে দেন। চক্রটি বারুয়াখালী ইউনিয়ন বড় কাউনিয়া কান্দি মৌজার আরএস খতিয়ান -৫ আরএস ৪২৩ ও ৪২৪ দাগের অর্পিত সম্পত্তির একটি ভূয়া ভ্রম সংশোধন দলিল ৬৩৬১ তারিখ ৩১/১২/৯৬। দলিল সৃজন করে দলিল লিখক পলাশ সরদার ও রানা ইসলাম নিজ নামে বায়না করে খতিয়ান সৃজন পূর্বক স্থানীয় পারুল বেগমের নিকট কতক অংশ ১০ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা বিক্রির নিমিত্তে ১ লক্ষ ৭হাজার টাকা বায়না গ্রহন পূর্বক রাশেদ খানকে দলিল রেজিস্টি করতে বললে রাশেদ তাতে রাজি না হওয়ায় গত ১৮ জুলাই ছোট কাউনিয়া স্টান্ডে হামলা চালিয়ে আহত করেন।পর দিন ১৯ জুলাই তাদের প্রতারনার বিষয়টি লিখিত ভাবে সহকারী কমিশনার (ভূমি)নবাবগঞ্জ অবহিত করলে প্রায় কোটি টাকা বে-আইনি আয় হতে বঞ্চিত হন চক্রের সদস্যরা। এতে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে যুবলীগ নেতা রাশেদ খানকে বাড়ি হতে ধরে বারুয়াখালী পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যান অতঃপর ফাঁড়ি পুলিশ তাকে প্রতারনা মামলায় জেল হাজতে প্রেরণ করেন।দীর্ঘদিন হাজত বাস শেষে বাড়িতে ফিরে এলেও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি তাকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি প্রদান করলে তাকে পালিয়ে বাঁচতে হচ্ছে। যুবলীগ নেতার বাব মোঃ সুলতান খান ২০১৩ সালে মধুসুদন সরকার মন্ডল হতে ক্রয় সুত্রে ১২ শতক জমির মালিকানা অর্জন করেন উক্ত দলিলে সাক্ষী হন দলিল লেখক পলাশ সরদার এবং তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রাণ গোবিন্দ হালদার। ক্রয়কৃত জমি ভোগ দখলে থাকা অবস্থায় মধুসূদন মন্ডলের ছেলে গোপাল মন্ডল ঢাকা জেলা সহকারী জজ আদালত একটি রেকড সংশোধন মামলা দায়ের করেন।যা এখনও চলমান তারপরও জমি দখল নিতে কয়েক দফায় হামলা করা হয়। নিজ পরিবার কে রক্ষা করতে মোঃ মোশাররফ মোল্লা সহ ৬ জনকে আসামী করে সিএমএম কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন যুবলীগ নেতা রাশেদ খান। ঢাকা জেলার সিআর মামলা নং-৩৪১/২৩। দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের কথা বলা হলেও রাশেদ খান কে বহিষ্কারে কোন শৃংখলাই রক্ষা করা হয়নি। কারন দর্শানোর নোটিশ বা কেন তাকে বহিষ্কার করা হচ্ছে তাও জানানো হয়নি। সরকার বিরোধী বক্তব্য প্রদানের মিথ্যা অভিযোগ আনা হলেও তার কোন তথ্য প্রমান পাওয়া যায়নি।
কথিত বহিষ্কারের শিকার রাশেদ খান বলেন,গঠনতন্ত্রের কোন নিয়ম না মেনে অন্যায়ভাবে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমাকে এখন পালিয়ে বাঁচতে হচ্ছে। আমার পরিবারের লোকজন তাদের ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারছে না।
এ ব্যপারে বারুয়াখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মোশাররফ মোল্লা নিকট বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি পাল্টা রাশেদ কোথায় জানতে চেয়ে উত্তেজিত ভাষায় কথা বলে মোবাইল ফোন রেখে দেন।
নবাবগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ সভাপতি, মোঃ সারোয়ার খান সারোয়ার মোবাইল ফোনে কথা বলতে রাজি হননি। তবে সাক্ষাতে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন বলে জানান।
যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন ওমরা হজ্জে সৌদি আরব অবস্থান করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।