uadmin ১ নভেম্বর ২০২৩ , ৬:২৮ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাট: পাসপোর্টধারী যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের উন্নত সেবা দিতে আধুনিকায়ন হচ্ছে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর। বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে এরই মধ্যে আরো ৬০ একর ৮৯ শতাংশ ভূমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
‘বুড়িমারী স্থলবন্দর সম্প্রসারণ ও প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল নির্মাণ’ নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এরই মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে বলে মনে করেন বন্দরসংশ্লিষ্টরা। এছাড়া কমবে পাসপোর্টধারী যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের হয়রানি।
বুড়িমারী স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ১১ একর ১৫ শতক জমির ওপর বুড়িমারী স্থলবন্দরটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে পাসপোর্টধারী যাত্রী ও আমদানি- রফতানিকারকদের সেবা দিয়ে আসছে। বন্দরে একটি প্রশাসনিক ভবন, তিনটি ডিজিটাল ওয়েব্রিজ স্কেল, একটি ফায়ার হাইড্রেন্ট সিস্টেম ভবন, একটি শ্রমিক বিশ্রামাগার, দুটি ৪০০ টন ধারণ ক্ষমতার শেড, একটি এক হাজার টন ধারণক্ষমতার শেড, দুটি ট্রান্সশিপমেন্ট শেড ও দুটি ওপেন ইয়ার্ড রয়েছে।
বুড়িমারী কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার আব্দুল আলীম বলেন, ‘পাসপোর্টধারী যাত্রী এবং আমদানি-রফতানি কার্যক্রমের যে ভলিয়ম বুড়িমারী স্থলবন্দরের সে তুলনায় সেবার মান নিম্নমুখী। এজন্য সরকার ভূমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে সেবার মান নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়িত হলে সব পক্ষের জন্য সুবিধা হবে।’
জায়গা সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময় কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না। অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন হলে লাভবান হবেন বলে মনে করেন আমদানি ও রফতানিকারকরা।
বুড়িমারী স্থলবন্দর আমদানিকারক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট তারেক ইসলাম বলেন, ‘বুড়িমারী স্থলবন্দর অপারেটিং কার্যক্রম পরিচালনায় জায়গা সংকট রয়েছে। এ কারণে ব্যবসায়ীরা বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন হলে ব্যবসায়ীরা যেমন উপকৃত হবেন, তেমনি চোরাচালানও বন্ধ হয়ে যাবে।’ উন্নয়ন কার্যক্রম শেষ হলে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি বন্দর ব্যবহারকারীদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হবে। এজন্য বিভিন্ন সময় বন্দরটিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণের দাবি তুলে আসছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রী মো. খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বুড়িমারী স্থলবন্দর আধুনিকায়নের কার্যক্রম এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে বিশ্বমানের একটি স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা করা হবে। এর ফলে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থা আমূল বদলে যাবে। এজন্য সবাইকে সহযোগিতার হাত এগিয়ে দিতে হবে।’
বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক (এডি) মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘বুড়িমারী-চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দর ব্যবহার করে প্রতি মাসে গড়ে ১২-১৩ হাজার পাসপোর্টধারী যাত্রী চলাচল করে। এছাড়া বন্দর ব্যবহার করে প্রতি মাসে গড়ে ৯-১০ হাজার বিদেশী ট্রাক ও ১৫০০-২০০০ দেশী ট্রাকে পণ্য আমদানি-রফতানি হয়। বিশাল এ কর্মযজ্ঞ পরিচালনায় ৬০ একর ৮৯ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করছে সরকার। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে আধুনিক পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ও পাসপোর্টধারী যাত্রী চলাচল। এতে যেমন সরকারি রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে তেমনি সব ধরনের চোরাচালান ও অনিয়ম বন্ধ করা সম্ভব হবে।’