বিবিধ

একুশের চেতনা উজ্জ্বীবিত করতে কুড়িগ্রামের পাড়া-মহল্লায় শিশু-কিশোরদের অস্থায়ী শহিদ মিনার নির্মাণ

  এস এম রাফি ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৭:১৭ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

আতাউর রহমান বিপ্লব, কুড়িগ্রাম:

মহান একুশের চেতনা ও ভাষা শহীদদের অবদান শিশু-কিশোরদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কুড়িগ্রামের পাড়া-মহল্লায় শিশু-কিশোররা বঁাশ-কাঠ, কলাগাছ ও রঙিন কাগজ দিয়ে তৈরী করছেন শহিদ মিনার। তাদের এ কাজে উজ্জ্বীবিত করছে স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রচ্ছদ কুড়িগ্রাম।
৫২’র ভাষা আন্দোলন বাঙালী জাতীয় জীবনের এক চরম অধ্যায়ের দিন। ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা বাঙালী জাতি পেয়েছি মাতৃভাষার অধিকার। এ দিবসটি এখন সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। এক সময় দিবসটি ঘিরে পাড়ায়-মহল্লায় শিশু-কিশোররা বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে শহিদ মিনার নির্মাণ করে শ্রদ্ধা জানাতো। এর সংখ্যা এখন অনেকাংশে কমে গেছে। একুশের চেতনা শিশু-কিশোরদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রচ্ছদ কুড়িগ্রাম জেলা সদরের পাড়া-মহল্লায় ৩য় বারের মত শহিদ মিনার নির্মাণের প্রতিযোগীতামুলক এ আয়োজন করেছে।
এ আয়োজনে সাড়াও মিলেছে। কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার মিস্ত্রিপাড়ার শিক্ষার্থী মুন্না জানান, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ নয়, ৫২’র ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতেই আমরা বাড়ির পাশেই অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করেছি।
জেলা সদরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় প্রায় ৩ শতাধিক অস্থায়ী শহিদ মিনার নির্মিত হয়েছে। এসব অস্থায়ী শাহদ মিনার তৈরীতে উৎসাহিত করছেন অবিভাবকরাও। কুড়িগ্রাম শহরের হরিকেশ এলাকার সাবেক সরকারি কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র সরকার জানান, আমরা ছোটবেলায় বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে শহিদ মিনার নির্মাণ করে একুশের বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতাম। এখন তা তেমন চোখে পড়েনা। গত ৩ বছর থেকে সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রচ্ছদ কুড়িগ্রাম শিশু কিশোরদের উৎসাহিত করছে শহিদ মিনার নির্মাণে। আমরা অভিভাবকরাও সন্তানদের অস্থায়ী শহিদ মিনার নির্মাণে সহযোগিতা করছি।
জাতীয় রবিন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ এর সাধারণ সম্পাদক সাতকুরি রায় নিলু জানান, প্রচ্ছদ কুড়িগ্রামের এ উদ্যোগ শিশুদেরকে একুশের চেতনায় উজ্জ্বীবিত করতে বড় ভূমিকা রাখবে। সাংস্কৃতিক সংগঠক ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক দুলাল বোস জানান, এ আয়োজন নিঃসন্দেহে শিশু কিশোরদের বাঙালী চেতনায় ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জ্বীবিত করবে।
আয়োজক সংগঠনের সংগঠক ইমতে আহসান শিলু ও সভাপতি জুলকার নাইন স্বপন জানান, প্রতিযোগীতা নয় মুলত শিশু-কিশোরদের একুশের মুল চেতনায় উজ্জ্বীবিত করতে এ আয়োজন। এ ধরনের উদ্যোগ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ুক এমন প্রত্যাশা সাংস্কৃতিক কর্মীসহ সকল স্তরের মানুষের।