Editor ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ , ৭:২৮ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
জহির রায়হান, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধিঃ কেউ বলে জামাই আদূরী, কেউ বলে কালোজিরা, আবার কেউ বা বলে ভোগ ধান। যে নামেই ডাকা হোকনা কেন সেই জামাই আদূরী ধান এখন আর তেমন চোখে পড়ে না।
আজ থেকে প্রায় ২০বছর আগে কৃষকরা এক প্রকার ধান চাষ করত। ধানটা দেখতে কালো এবং বেশ লম্বা। ধানের শীষ আশা থেকে শুরু করে মানুষের পেটে না যাওয়া পর্যন্ত মনোমুগ্ধকর সুগন্ধী। কোন বাড়িতে জামাই আদুরী চাল রান্না করলে তার সুগন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়তো, রাস্তা দিয়ে পথচারীরা সহযেই বুঝ নিতে পারতো এই বাড়িতে পোলাও রান্না হচ্ছে। কৃষকরা তাদের নতুন বা পুরাতন জামাইকে দাওয়াত দিলে বা জামাই শ্বশুড় বাড়িতে বেড়াতে আসলে জামাই আদুরী চালের পোলাও খাওয়াতে না পারলে যেন পরিবেশনে অতৃপ্তি থাকতো। এখন সেই ধান আর আগের মতো চোখে পড়ে না। জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে কমিয়ে আসছে আবাদী জমির পরিমান তাই গবেষনায় নতুন নতুন আবিস্কৃত স্বল্প মেয়াদী উচ্চ ফলনশীল ধানের আর এর ভীড়ে বিলুপ্তির পথে আজ জামাই আদুরী।
উপজেলার নিজপাড়া গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, বি-৩, বি-৫২, হাই ব্রিড,বি-২৮, বি-২৯, বিনা৭ সহ বিভিন্ন ধরনের স্বল্প মেয়াদী উচ্চ ফলনশীল ধানের বীজ এখন বাজারে পাওয়া যায়। যার ফলন একর প্রতি প্রায় ৬০মন। আর কালোজিড়া বা জামাই আদরী ধান উৎপাদন হইতো একর প্রতি সবর্”চ ২০থেকে ২৫মন তাই এসব উচ্চ ফলনশীল ধানের আড়ালে হারিয়ে গেছে জামাই আদুরী ধান। তিনি বলেন, একটা সময় ছিলো জামাই আদুরী ধান আবাদ না করলে প্রতিটি কৃষকের চাষাবাদে অতৃপ্তি থাকতো। কিন্তু সময়ের সাথে তাল মিলাতে লাগামহীন এই দ্রব্যমূল্যের বাজারে অল্প উৎপাদন করে সংসার চলার কথা না। কৃষকরা মনে করেন টাকা থাকলে জামাইকে বাজার থেকে পোলার চাল কিনে খাওয়ানো যাবে। তবে, তিনি স্বীকার করেন জামাই আদুরী চালের পোলায়ের স্বাদ আর বর্তমান বাজারে পাওয়া পোলায়ের স্বাদ সম্পুর্ন আলাদা। এর মাঝেও যাদের বেশী জমি আছে এবং পুরনো কৃষক যারা তারা এখনো টুকটাক এই ধান আবাদ করেন।