এস এম রাফি ২৩ জানুয়ারি ২০২৩ , ৮:৪১ পূর্বাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
আতাউর রহমান বিপ্লব, কুড়িগ্রাম:
কুড়িগ্রামে সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষককের কক্ষে এক সহকারী শিক্ষকের ওপর চড়াও হয়ে লাঞ্চিত করার অভিযোগ এনে ভর্তি বাতিলকৃত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের বিরুদ্ধে সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে উক্ত বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো: আব্দুল হাই সিদ্দিকী চারজন অভিভাবকদের নামে এ অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, রোববার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে কুড়িগ্রাম সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট ভর্তি বাতিলের বিষয়টি জানতে চায় এবং প্রধান শিক্ষকের হাতে পুর্ণবিবেচনার আবেদন জমা দেয়। এরই মধ্যে মাসুদ রানা নামের এক অভিভাবকের সাথে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো: আব্দুল হাই সিদ্দিকীর সাথে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে অভিভাবক মাসুদ রানা, রুমন মিয়া, আমিনুর রহমান ও বিদ্যুৎ নামের অভিভাবকগনসহ আরো অনেকে উক্ত শিক্ষকের ওপর চরাও হয়ে ধাক্কা মেরে রুমের এক কোনায় নিয়ে যায়। এসময় কিল-ঘুষি মারার অভিযোগ করেন উক্ত শিক্ষক। উল্লেখিত ৪ জনসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন।
এঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরা হক।
অভিভাবকরা জানান, তাদের সন্তানদের ভর্তি বাতিলের বিষয়টি পুর্ণবিবেচনার জন্য তারা প্রধান শিক্ষকের নিকট আবেদন জমা দিতে যান। এসময় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সহকারী শিক্ষক মো: আব্দুল হাই সরকারের সাথে অভিভাবক মাসুদ রানার বির্তক হয়। এতে উত্তেজিত হয়ে তর্কাতর্কির ঘটনা ঘটে। পরে অন্যান্য শিক্ষকরা উত্তেজিত হলে অভিভাবক মাসুদ রানাকে প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে বের করে দেয়া হয়। মাসুদ রানা জেলা বিএনপি’র সহ ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক।
ভুক্তভোগী শিক্ষক মো: আব্দুল হাই সিদ্দিকী জানান, নিয়মানুযায়ী একাধিক আবেদনের কারনে মন্ত্রাণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়। এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে মাসুদ রানা আমার উপর চড়াও হয় এবং কিলঘুষি মারে। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি। আমি বিচার চাই।
অভিযুক্ত মাসুদ রানা জানান, লটারিতে তালিকায় থাকায় আমার সন্তানকে গত ২২ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করালে তারা ২৮ ডিসেম্বর সে ভর্তি বাতিল করে। ভর্তি পুণবিবেচনার আবেদন দিতে আসলে আলোচনার এক পয়ায়ে উক্ত শিক্ষক উত্তেজিত হয়ে বেয়াদব বললে অন্যান্য অভিভাবক সহ আমি প্রতিবাদ করি। এ সময় আমার সাথে কথা কাটাকাটি ঘটনা ঘটে। কোন হাতাহাতির কোন ঘটনা ঘটেনি।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মোহাম্মদ শাহারিয়ার জানান, এবিষয় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ছাত্র ভর্তির ফলাফল প্রকাশ করা হয়। বিদ্যালয়ের ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী ডিসেম্বরের ১৮ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত ছাত্র ভর্তি করা হয়। ভর্তি হওয়ার পর ভর্তিকৃত ছাত্রদের নামে একাধিক আবেদন করায় অভিযোগে গত ২৮ ডিসেম্বর ৪২ জন শিক্ষার্থীও ভর্তি বালিত করে।