উত্তরের আলো প্রতিবেদক ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৩:৫৯ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের পিচিংয়ের নিচে ব্লকডাম্পিংয়ে ধস দেখা দিয়েছে, যা নদী পাড়ের মানুষের মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। উপজেলার রমনা সোনারীপাড়া এলাকায় ডানতীর পিচিংয়ের নীচে ডাম্পিং করা ব্লকের তলদেশ থেকে মাটি সরে গিয়ে প্রায় ৪শ মিটার জায়গায় ডাম্পিং ব্লক দেবে যাওয়া দেখা যায়। গত দুই সপ্তাহ ধরে আস্তে আস্তে ব্লক দেবে যাওয়ার কারণে ওই এলাকার মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক দেখা দিলেও কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা বিআইডব্লিউটিএ’র অপরিকল্পিত নদী খননকে এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করছেন।
জানা গেছে,ব্রহ্মপুত্র নদের কড়াল গ্রাস থেকে চিলমারীকে রক্ষার জন্য ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের আওতায় নদের ডানতীর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রাস্তাটি ব্লক পিচিং করা হয়। প্রকল্পের আওতায় উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ফকিরেরহাট এলাকা থেকে রমনা ইউনিয়নের জোড়গাছহাট বাজার পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন করা হয়। তবে, পরবর্তীতে কয়েক দফা পিচিংয়ে ধস দেখা দিলে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধানে তা মেরামত করা হয়। সম্প্রতি রমনাঘাট (চিলমারী বন্দর) থেকে দক্ষিণে সোনারী পাড়া এলাকার দৌলা মিয়ার বাড়ী হতে টোনগ্রাম জামে মসজিদ পর্যন্ত প্রায় ৪শ মিটার এলাকায় ডানতীর ব্লক পিচিংয়ের নিচে ডাম্পিংয়ে ধস দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে শনিবার দুপুরে রমনা ঘাট সোনারীপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সোনারীপাড়া দৌলা মিয়ার বাড়ীর নিকট হতে টোনগ্রাম জামে মসজিদ পর্যন্ত প্রায় ৪শ মিটার এলাকায় পিচিংয়ের নিচে ডাম্পিংয়ের ব্লক অনেক জায়গায় দেবে গেছে, যা গত দুই সপ্তাহ ধরে অব্যাহত রয়েছে। এ সময় শাহিনুর বেগম, মঞ্জু মিয়া, আলমগীর হোসেন, মফিজল হক, সাইফুল ইসলামসহ স্থানীয়রা জানান, কিছুদিন পূর্বে ফেরি চলাচলের চ্যানেলে বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষ থেকে নদী খনন করে পূর্ব পাশ্বে বালু দেয়ায় সামনে চর পড়েছে। এর ফলে নদীর স্রোত এসে সরাসরি ডানতীরে আঘাত হানে, যার ফলে পিচিংয়ের নিচে ব্লক ডাম্পিংয়ে ধস দেখা দেয়।
স্থানীয়রা জানান, কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো সত্ত্বেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। রমনা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদীন বলেন, অপরিকল্পিত নদী খননের ফলে ডানতীরে স্রোত আঘাত হানে। এতে একদিনে কয়েক ফুট এলাকায় ব্লক দেবে যাওয়ার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত কম-বেশী ব্লক দেবে যাচ্ছে। তিনি সতর্ক করেন যে, যদি এখনই সংস্কারের উদ্যোগ না নেয়া হয়, তবে চৈত্রি মাসের ঢলে ডানতীর ছুটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন তিনি।
বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান জানান, পরবর্তী খননের সময় সবার সাথে পরামর্শ করে ফেরির রাস্তা খনন করা হবে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কুড়িগ্রামের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল কাদের বলেন, রমনা ঘাট এলাকায় ডাম্পিং ব্লক দেবে যাওয়ার বিষয়টি তিনি শুনেছেন এবং সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক বলেন, তিনি ডাম্পিং ব্লক দেবে যাওয়ার এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং বিষয়টি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেছেন।