এস এম রাফি ১৮ জানুয়ারি ২০২৩ , ৯:২৯ পূর্বাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
চিলমারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে সবজি চাষের দিকে ঝুঁকেছেন কৃষকরা। ধান চাষের থেকে সবজি চাষে উপযুক্ত মাটি হওয়ায় আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের সবজি চাষে। এতে অধিক মুনাফা পাওয়ায় স্বচ্ছলতা ফিরেছে কৃষক পরিবারগুলোর। এই উপজেলা টি বন্যাকবলিত ও প্রায় প্রতি বছরই ভাঙনের স্বীকার হয়৷ ফলে অনেকেই হারিয়েছেন আবাদী জমি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা প্রতি বছর ধান চাষে নির্ভর থাকায় অনেকে ইতি মধ্যে হারিয়েছে পুজিও। ধানের মুল্য সঠিক ভাবে না পাওয়ায় অনেকে জমি বর্গা দিয়েছে। তবে কৃষকরা বলছেন, ধান চাষ ছেড়ে লাভের জন্য সবজি চাষে ঝুঁকে পড়েছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দরিদ্রতম এই উপজেলায় বর্তমানে ৪ থেকে ৫ হাজার সবজি চাষি রয়েছে। অথচ দু’চার বছর আগেও এ সংখ্যা ছিল ১ থেকে দেড় হাজার। অন্যান্য আবাদের থেকে সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে নিম্ন আয়ের কৃষকরা। ফলে প্রতি বছরই সবজি চাষির সংখ্যা ক্রমাগতই বেড়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের পাত্রখাতা এলাকায় গেলে দেখা যায় বিস্তৃর্ন এলাকাজুড়ে আবাদ হয়েছে সবজির। এসময় ওই এলাকার কৃষক সাইদুর জানান, ৩৩শতাংশ জমিতে বেগুন চাষ করতে তার ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। আর তিনি এ পর্যন্ত বেগুন বিক্রি করেছেন প্রায় ২০ হাজার টাকা আরো প্রায় ১লক্ষ টাকার বেগুন বিক্রি করতে পাবেন। অপর কৃষক ফরিদুল বলেন, এই জমিতে ধান আবাদ করে কোন বছর লাভ-লোকসান সমান হয়, আবার কখনো লোকসানও গুনতে হয়েছে। এবার ১২ শতক জমিতে বেগুন চাষ করে ইতি মধ্যে ১৫ হাজার টাকা বিক্রি করেছি আরো প্রায় ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো এতে আমার প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা লাভ হবে।
বিভিন্ন এলাকার কৃষক মাইদুল, মাহফুজার, শফিকুল ইসলামসহ অনেকেই জানান, তারা এবার সবজি আবাদে লাভবান হয়েছেন। এছাড়াও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে উৎপাদিত সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি শীত মৌসুমে উপজেলার সবজি চাষীরা ৫৯৫ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করেছে। এসবের মধ্যে বেগুন, মরিচ, পাতা কপি, ফুল কপি, সিম, মূলা অন্যতম। বিগত বছরের তুলনায় কৃষকররা এবার লাভবান হবেন বলে মনে করছেন কৃষিবিদরা।
উপজেলা কৃষি অফিসার কুমার প্রণয় বিষান দাস বলেন, বার বার বন্যায় ধান ক্ষেতের ক্ষতিসহ ধানে লাভবান না হওয়ায় এবং সবজি চাষে অধিক মুনাফা পাওয়ায় সেসব জমিতে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছে। প্রতিনিয়ত কৃষকদের পরামর্শ ও খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।