এস, এম রাফি চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীরা পরিবেশ বান্ধব উন্নত চুলা ব্যবহার করছেন। চিলমারী উপজেলা ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে প্রতি বছর বন্যা কবলিত হয়। বন্যায় মানুষের মাঠের ফসল, বসত বাড়ির আশে-পাশের সবজি, হাঁস-মুরগী গবাদি প্রাণির খাবারসহ ঘর-বাড়ির অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতি সাধিত হয়, তারপরও মানুষ নতুন করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে।
জলবায়ুর ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কারিতাস বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগি হিসাবে দুর্যোগ প্রবন অঞ্চলে দরিদ্র মানুষের জীবন জীবিকার উন্নতি সাধনে কাজ করছে। বর্তমানে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ এবং রমনা ইউনিয়নের ২০০০ পরিবার এখন পরিবেশ বান্ধব উন্নত চুলা ব্যবহারের আওতায় এসেছে। চুলা ব্যবহারকারী কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের বুরুজের পাড় গ্রামের মোছাঃ লাভলী বেগম বলেন, আগে আমি সাধারণ চুলা ব্যবহার করতাম তাই নানা ধরনের সমস্যা হতো। যেমন, রান্নার সময় হাঁচি কাঁশি বেশি বেশি লাগতো, প্রায়ই তাপ লেগে হাত পুড়ে যেত, রান্না ঘরের পরিবেশ কালো হয়ে হতো। যেদিন কারিতাস বাংলাদেশ সবুজ জীবিকায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব উন্নত চুলার বিভিন্ন উপকারীর দিকগুলো জানতে পারছি সেদিন হতে আমি পরিবেশ বান্ধব উন্নত চুলা ব্যবহার করছি। এই চুলা আমি সহজেই ব্যবহার করতে পারি, কম সময় লাগে, ধোঁয়া হয় না, তাই আমার অনেক দিক দিয়ে সুবিধা হয়েছে। আমি এখন নিয়মিত এই চুলা ব্যবহার করছি।
কারিতাস বাংলাদেশ সবুজ জীবিকায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব উন্নত চুলার উপকরণ হিসাবে পাওয়া মোছায় সদস্যরা বলেন, গত তিন বছর আগে এই চুলার ব্যবহার খুবই কম ছিল। বর্তমানে আমাদের গ্রামের অনেকে এখন ব্যবহার করছে। আমরা নিজেদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে এড়াতে পরিবেশ বান্ধব উন্নত চুলার ব্যবহার করছি।
কারিতাস বাংলাদেশ এর সবুজ জীবিকায়ন প্রকল্পের জুনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মিলন এককা জানান, কারিতাস বাংলাদেশ জার্মানীর আন্ধেরি হেলফি এবং বিএমজেড এর আর্থিক সহায়তায় চিলমারী উপজেলায় প্রকল্প এলাকার দরিদ্র পরিবারগুলোর খাদ্য নিরাপত্তা, বছরব্যাপি আয় নিশ্চিত করা, জলবায়ু সহনশীল জৈব কৃষি চর্চা ও কার্যকরী সবুজ শক্তির ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন শিক্ষামুলক আলোচনা, দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষমতা তৈরিসহ চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ এবং রমনা ইউনিয়নে ১৯৭৫ জন উন্নয়ন সহযোগিকে উক্ত প্রকল্প হতে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পরিবেশ বান্ধব উন্নত চুলা এটি জলবায়ু সহনশীল, এটি ব্যবহারে সময় এবং জ্বালানী সাশ্রয় হয়। দীর্ঘমেয়াদে এটি ব্যবহার করে আমাদের উন্নয়ন সহযোগিরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে পরিবেশ, মা ও শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষায় পরিবেশ বান্ধব উন্নত চুলার ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরী।