মো.এমদাদুল হক, বগুড়া ১৬ নভেম্বর ২০২৩ , ৪:৪২ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
এবারের চলতি মৌসুমে বগুড়ার কয়েকটা উপজেলাগুলোর ইউনিয়ন গ্রাম পর্যায় আমন ধানের পাকা ধানের গন্ধে কৃষকদের মনে এখন বেশ প্রফুল্লতা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে আগাম আমন কাটাও শুরু হয়েছে। এখন মাঠ থেকে ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা।
মাঠ থেকে নতুন ধান বাড়িতে তোলার জন্য আঙ্গিনা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন কৃষাণীরা। পাশাপাশি এসব জমিতে শীতের সবজি চাষ করার প্রস্তুতি শুরু করেছেন তারা।
বগুড়ার কৃষকরা মনে করছেন ধানের দাম ভালো পেলে প্রতি বিঘায় চার থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত লাভবান হতে পারবেন তারা।
চলতি বছর প্রতি বিঘায় ১৫/১৬ মণ করে ধানের ফলন হয়েছে। আগাম জাতের ধান কেটে এসব জমিতে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে চাষ করা হবে শীতকালীন বিভিন্ন শাক সবজি।
শাজাহানপুরে পানেল গ্রামের কৃষক আমিনুর বলেন, প্রতি বিঘা ৮ হাজার টাকা দিয়ে তিনি মানুষের কাছ থেকে পত্তন নেওয়া ৫ বিঘা জমির ধান কেটেছে। বাজারে নতুন ধান প্রতি মন বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা থেকে ১১৫০ টাকা। তার হিসেবে বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে ১৫ মন। সার, বীজ কীটনাশক, সেচ ও শ্রমিকের মজুরি মিলিয়ে খরচ হয় প্রতি বিঘা ১৭ হাজার টাকা। তার মতে সেই হিসেবে ধান চাষে তেমন লাভ থাকবে না । বিঘা প্রতি খড় বিক্রি হয় ২ হাজার টাকায়।
কাহালুর কৃষি শ্রমিক খোরশেদ আলম জানান, তিনি প্রতিদিন নিজ গ্রাম থেকেই ৮০০ টাকা মজুরিতে ধান কাটা শ্রমিকের কাজ করছেন। তিনি নিজেও একজন প্রান্তিক বর্গাচাষি। ফলে সব মিলিয়ে ভালোই আয় করছেন। তার এই ধান কাটা মাড়াইয়ের মৌসুমে তিনি ৩০ হাজার টাকা আয় করবেন।
নন্দীগ্রাম বিজরুল গ্রামের ধান চাষী তাইজুল ইসলাম বলেন,২ বিঘা জমির ধান কেটে নিয়েছে।প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা, ধান ১৪ মনের বেশি হবে না, বাজারে এখন ধানের দাম প্রতি মণ ১২০০ টাকা,খরচ অনুযায়ী লাভ হবে না।
দুপচাঁচিয়া কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন,আজ থেকেই ধান কেটে নেওয়া শুরু করেছি, বিঘা প্রতি ১৮ মণ ধান হতে পারে, যদি ১৮ মন করে ধান হয়, প্রতি বিঘা থেকে ৮ -৯ হাজার টাকা লাভবান হতে পারব, তবে আমার নিজের জমি এই কারণেই লাভ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। মানুষের কাছ থেকে জমি পত্তন নিয়ে,ধান চাষ করে লাভবান হওয়া এখন খুব কঠিন কারণ প্রত্যেকটা জিনিসেরই দাম বেশি।
বগুড়া জেলা কৃষি বিভাগ বলেন, চলতি আমন মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৮১ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এবার ১০ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে চাষ হয়েছে আমনের। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৯৯ হাজার মেট্রিক টন।
গেল বছর আমনের উৎপাদন হয় ৫ লাখ ৭৭ হাজার মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে পশ্চিম বগুড়ার নন্দীগ্রাম, কাহালু, দুপচাঁচিয়া এবং বগুড়া সদরের কিছু অংশে আমন ধানের কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২০ ভাগ জমির আমন ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে।