নিজস্ব প্রতিবেদক ১১ জানুয়ারি ২০২৪ , ১১:০৮ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
নতুন সরকারের মন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে রাখা হয়েছে ছয়টি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।
বৃহস্পতিবার ১১ জানুয়ারি বঙ্গভবনে শপথ অনুষ্ঠানের পরই প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে রয়েছেন ২৫ মন্ত্রী এবং ১১ প্রতিমন্ত্রী। এদের মধ্যে ১৪ জন নতুন মুখ।
গতবারের আগের কোনো সময় মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন, এমন পাঁচজনকে এবার ফেরানো হয়েছে।
নতুন মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন কূটনীতিক এএইচ মাহমুদ আলী, যিনি ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর পাঁচ বছর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।
ষাটের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পড়ে পরে সেখানেই কিছুদিন শিক্ষকতা করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী দায়িত্ব পেয়েছেন হাছান মাহমুদ।
গত পাঁচ বছর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর দায়িত্ব সামলে আসা হাছান মাহমুদ ২০০৯ সালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তবে তখন অল্প কিছুদিন পর তাকে সরিয়ে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী করা হয়।
বাণিজ্যে পূর্ণমন্ত্রী দেয়া হয়নি। প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটুকে। টাঙ্গাইলের এই সংসদ সদস্যের পিতা ছিলেন রাজধানী মোহাম্মদপুর এলাকার জনপ্রিয় সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে। ঢাকা-১৭ আসনের তরুণ এই সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা।
এদিকে শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনিকে দেয়া হয়েছে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে। আর উপমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলে আসা মহিবুল হাসান চৌধুরীকে করা হয়েছে শিক্ষামন্ত্রী। চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে তরুণ নওফেলকে একাই সামলাতে হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এদিকে আ ক ম মোজাম্মেল হক, ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হক, নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, আসাদুজ্জামান খান (কামাল) মো. তাজুল ইসলাম, সাধন চন্দ্র মজুমদার এবং ইয়াফেস ওসমানকে একই দপ্তরে রাখা হয়েছে। পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুককেও একই দপ্তরে রাখা হয়েছে।
এদিকে প্রতিমন্ত্রী থেকে পূর্ণমন্ত্রী করে একই দপ্তর দেওয়া হয়েছে ফরিদুল হক খান এবং ফরহাদ হোসেনকে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে থাকছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রী
১) আ ক ম মোজাম্মেল হক- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
২) ওবায়দুল কাদের- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
৩) আবুল হাসান মাহমুদ আলী- অর্থ মন্ত্রণালয়।
৪) আনিসুল হক- আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
৫) নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন- শিল্প মন্ত্রণালয়।
৬) আসাদুজ্জামান খান (কামাল)- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
৭) মো. তাজুল ইসলাম- স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
৮) মুহাম্মদ ফারুক খান- বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
৯) মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
১০) ডা. দীপু মনি- সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়।
১১) সাধন চন্দ্র মজুমদার- খাদ্য মন্ত্রণালয়।
১২) আব্দুস সালাম- পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।
১৩) মো. ফরিদুল হক খান- ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
১৪) র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী- গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
১৫) নারায়ণ চন্দ্র চন্দ- ভূমি মন্ত্রণালয়।
১৬) জাহাঙ্গীর কবির নানক- বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।
১৭) মো. আব্দুর রহমান- মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়।
১৮) মো. আব্দুস শহীদ- কৃষি মন্ত্রণালয়।
১৯) স্থপতি ইয়াফেস ওসমান- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
২০) ডা. সামন্ত লাল সেন- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
২১) মো. জিল্লুল হাকিম- রেলপথ মন্ত্রণালয়।
২২) মো. ফরহাদ হোসেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
২৩) নাজমুল হাসান (পাপন)- যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
২৪) সাবের হোসেন চৌধুরী- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
২৫) মহিবুল হাসান চৌধুরী- শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রতিমন্ত্রী
১) নসরুল হামিদ- বিদ্যুৎ বিভাগ।
২) খালিদ মাহমুদ চৌধুরী- নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়।
৩) জুনাইদ আহমেদ পলক- ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
৪) জাহিদ ফারুক- পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়।
৫) সিমিন হোমেন রিমি- মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
৬) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা- পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
৭) মো. মহিববুর রহমান- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
৮) মোহাম্মদ আলী আরাফাত- তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।
৯) শফিকুর রহমান চৌধুরী- প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
১০) রুমানা আলী- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
১১) আহসানুল ইসলাম (টিটু)- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২২২টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, স্বতন্ত্র ৬২ এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) একটি করে আসন পায়। একটি আসনে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি। আর একটি আসনে ভোট স্থগিত করা হয়।