এস এম রাফি ২৫ এপ্রিল ২০২৩ , ৪:৫৫ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। ধান কাটা, মাড়াই ও রোদে শুকানোসহ নানা কাজে ব্যস্ত কৃষক-কৃষাণীরা।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখাযায়, প্রাকৃতিক দূর্যোগের ক্ষতি থেকে বাঁচতে সময়ের আগেই কৃষক ধান কাটা শুরু করেছেন। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো পুরি বোরো ধান কাটা মাড়াই শুরু হবে বলে জানিয়েছে কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৬ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১৬ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে ইরি -বোরো ধান চাষ হয়েছে। যার মধ্যে হাইব্রীড ৮ হাজার ৯১০ হেক্টর, উফসি ৭ হাজার ৪৯৫ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৫ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করেছেন কৃষক। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৪৯২ মেট্রিক টন।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, দফায় দফায় বিদ্যুৎ, সার, ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি ও কৃষি শ্রমিকের মজুরী বেড়ে যাওয়ায় কৃষকদের উৎপাদনের খরচ আগের তুলনায় বেড়ে গেছে। আর ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় লোকশানের আশঙ্কা করছেন তারা। বর্তমানে হাট-বাজার গুলোতে নতুন ধান প্রতিমণ ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। এতে বোরো ধান চাষাবাদে লাভের মুখ দেখতে পারবেন না বর্গাচাষীরা।
উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের বর্গাচাষী জামাল উদ্দিন, আজগর ও আব্দুল মজিদ বলেন, একজন কৃষি শ্রমিকের দৈনিক মজুরি দিতে হচ্ছে ৫০০ টাকা। এক বিঘা জমির ধান কাটতে ও মাড়াই করতে প্রায় ৪ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। এছাড়াও এক বিঘা(৩২ শতাংশ) জমিতে চারা রোপন থেকে কাঁটা মাড়াই পর্যন্ত যত টাকা খরচ হয়েছে। উক্ত জমির মালিককে ছয় মণ ধান পরিশোধ করার পরে সবটুকু ধান বিক্রি করে কোন মতে খরচের টাকা তোলা সম্ভব হলেও লাভের মুখ দেখবে না বর্গাচাষিরা।
একাধিক কৃষক জানান তারা ব্রি-২৮ সহ বিভিন্ন জাতের চিকন ধান আবাদ করেছিলেন। কিন্তু নেক ব্লাস্টে আক্রান্ত হয়ে জমির অধিকাংশ ধান চিটা হয়ে গেছে। এতে উৎপাদন খরচ তো ওঠবেই না বরং লোকসানের শঙ্কা তাদের।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুজন কুমার ভৌমিক বলেন, আমরা শুরু থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের খোঁজ খবর রেখেছি এবং সময়মত সার কিটনাশক প্রয়োগসহ নানা পরামর্শ দিয়ে আসছি। বৈরী আবহাওয়ার ক্ষতি থেকে বাঁচতে যে সব ক্ষেতেল ধান ৮০ শতাংশ পাকার উপযোগী হয়েছে চাষিদের সেসব ধান কাটার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।