স্টাফ রিপোর্টার ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ৫:৫৪ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
মায়ের ভাষার জন্য রক্ত ও প্রাণদানের ইতিহাস জ্বলজ্বল করছে। বিশ্বের বুকে এই অনন্য ইতিহাস রচনা করেছে বাংলাদেশ। পলাশ-শিমুল ফোটার দিনে তাইতো আজ গেয়ে উঠছে মন— আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি?
আজ একুশে ফেব্রুয়ারি। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাংলা ভাষার দাবিতে প্রাণদানের গৌরবোজ্জ্বল মাতৃভাষা আন্দোলনের আজ ৭২ বছর পূর্ণ হলো।
১৯৫২ সালের এইদিনে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর তৎকালীন পুলিশ নির্মমভাবে গুলিবর্ষণ করে। এতে কয়েকজন ছাত্র শহীদ হন। তাদের মধ্যে সালাম, বরকত, রফিক, শফিউর, জব্বার আরো নাম জানা অনেক অন্যতম। তাই দিনটিকে শহীদ দিবস বলা হয়ে থাকে। আর ২০১০ সালে জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারিকে সারাবিশ্বে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। তাই দিনটি বাঙালি জাতি ও বাংলা ভাষা ব্যবহারকারীদের জন্য গৌরবোজ্জ্বলের। অত্র প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সভাপতি, সাইফুল ইসলাম, বলেন,আলোচনা শুরুতেই সভাপতি সাহেব ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উপস্থিত সকলকে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতার পালনের জন্য অনুরোধ করেন। সভাপতি জানান মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ পৃথিবীর ইতিহাস বিরল ঘটনা। বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ইউনেস্কো কর্তৃক অমর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় দিবসটির তাৎপর্য বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে সভাপতি সাহেব জানান।
উক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ রফিকুল ইসলাম সরকার জানান,একুশ মানেই হলো- পরাশক্তির কাছে মাথা নত না করা। একুশ একটি বিদ্রোহ, বিপ্লব ও সংগ্রামের নাম। ‘একুশ’ হল মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য রাজপথ কাপানো মিছিল, স্লোগান, আন্দোলনে মুখরিত একটি মুহূর্ত। এই দিনে বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা তাদের বুকের তাজা রক্তে পিচ ঢালা রাজপথে সিক্ত করে মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার কে আদায় করেছে পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠীয় কবল থেকে।
অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোছাঃ শবনম জেলী বলেন,১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি এদেশের জাতীয় জীবনে একটি স্মরণীয় ও তাৎপর্যবহ দিন। আর একুশে ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করেই বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনা ঘটে এবং শোষণ ও পরাধীনতার শৃংখল থেকে মুক্ত হয় এদেশ ও জাতি।
সম্মানিত সহকর্মী বৃন্দু ও শিক্ষার্থীরা , বাংলা নামক দেশটি বিভিন্ন কারণে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তন্মধ্যে প্রথম এবং অন্যতম কারণ হল ভাষার জন্য সংগ্রামক, আত্মত্যাগ, বিপ্লব পৃথিবীর অন্য কোন এসে সংঘটিত হয়নি। ইতিহাসে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, প্রত্যেক জাতিই জন্মগত ভাবে প্রাপ্ত ভাষায় স্বাধীনভাবে কথা বলে এবং মনের ভাব প্রকাশ করে। ভৌগলিক স্বাধীনতা না থাকলেও ভাষার স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার কিন্তু বিশ্ববাসী বিষ্ময়বিভুতচিত্তে অবলোকন করেছে। জন্মগত অধিকার মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য বাংলার ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, শ্রমিক, পেশাজীবী, কৃষক, মজুর থেকে খশুরু করে সর্বস্তরের লেলিয়ে দেয়া পুলিশের গুলিতে খজীবন দিয়েছে সালাম, বরকত, রফিক,জব্বার সহ অসংখ্য তাজা প্রাণ। রক্তের বন্যায় সিক্ত হয়েছে বাংলা মায়ের বুক।আলোচনা সভায় বক্তারা শ্রদ্ধার সঙ্গে মহান ভাষা আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী ভাষা শহীদদের স্মরণ করেন। দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে তারা বলেন, ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক ঘটনা। উক্ত আলোচনায় আরো বক্তব্য রাখেন মোঃ আতাউর রহমান, সেকেন্দার আলী, সহকারী শিক্ষক আসাদুজ্জামান সরকার, আব্দুল ওয়ারেছ সরকার বক্তারা বলেন। পরে অত্র প্রতিষ্ঠানের পাশা পাশি পুস্পস্তবক অর্পণ করেন অত্র বিদ্যালয়ের প্রতিটি শ্রেণীর ছাত্র/ছাত্রীবৃন্দু
এরই ধারাবাহিকতায় আসে বাঙালির চির কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। অমর একুশের চেতনা বাস্তবায়নে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তারা।
এরপর ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।