uadmin ৫ মার্চ ২০২৪ , ৩:৩৮ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
সদরুল আইনঃ
রাজধানীর সাতারকুল বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুন্নতে খতনার জন্য অজ্ঞান করা শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
আদালত লিখিত আদেশে বলেছেন, দেশে অনেক দক্ষ চিকিৎসক আছেন। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির ৪ জনের মধ্যে ৩ জন একই মেডিকেল কলেজের (মুগদা মেডিকেল) যা সন্দেহজনক।
শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে নতুন কমিটি গঠনের লিখিত আদেশে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেছেন। ৪ পৃষ্ঠার লিখিত আদেশ মঙ্গলবার (৫ মার্চ) প্রকাশিত হয়েছে।
লিখিত আদেশে বলা হয়, আমরা সতর্কতার সঙ্গে উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক বিবেচনা করেছি এবং রেকর্ডে থাকা তথ্যগুলো পর্যালোচনা করেছি। এতে কোনো বিতর্ক নেই যে, শিশু আয়ানকে শুধু খতনার জন্য অস্ত্রোপচারের উদ্দেশ্যে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নয়। এটাও বিতর্কিত নয় যে শিশু আয়ানের খতনা করার আগেই অ্যানেস্থেসিয়ার পদ্ধতি অনুসরণ করার কারণে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়।
কিন্তু শিশু আয়ানের মৃত্যু নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গঠিত চার সদস্যের কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে, সেই প্রতিবেদনে শিশু আয়ানের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কোনো ইতিবাচক মতামত দেয়নি।
বরং শিশু আয়ান ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা রোগে ভুগছিলেন বলে অনুমান করে রিপোর্ট দিয়েছে তদন্ত কমিটি। তাহলে আয়ানের কীভাবে মৃত্যু হলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আদালতের কাছে মনে হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সন্তোষজনক নয়। আমাদের দেশে আরও দক্ষ চিকিৎসক আছে বলে প্রতীয়মান হয়।
কিন্তু তদন্ত কমিটির চারজনের মধ্যে তিনজন একই মেডিকেল কলেজের যা সন্দেহজনক।
আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এবং উন্নতি নিশ্চিত করার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা অপরিহার্য। এ কারণে আমরা নতুন করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিচ্ছি। তারা এক মাসের মধ্যে আদালতে নতুন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
কমিটির প্রধান হলেন— শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ ও অ্যানেস্থেসিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এ বি এম মাকসুদুল আলম। কমিটির সদস্যরা হলেন— বিএসএমএমইউর পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সুশঙ্কর কুমার মণ্ডল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক হাফিজুর রহমান, ঢাকা শিশু হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারির অধ্যাপক ডা. আমিনুর রশীদ ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর প্রিভেন্টিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিনের (নিপসন) সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাথী দস্তিদার। এই কমিটি শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনাটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করবে।
এছাড়া শিশু আয়ানের চিকিৎসায় চিকিৎসকদের অবহেলা ঘটেছে কি না তা খুঁজে বের করবে ও দায়ীদের চিহ্নিত করবে এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে পদক্ষেপের সুপারিশ করবে।
তদন্ত কমিটিকে এ আদেশ প্রাপ্তির তারিখ থেকে এক মাসের মধ্যে বিষয়টি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। আমরা প্রত্যাশা করি কমিটি তদন্ত কমিটির সবাই অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।