এস এম রাফি ১২ নভেম্বর ২০২৩ , ১:২৫ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
মোঃ মীমরাজ হোসেন,সোনারগাঁ(নারায়ণগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ আগস্ট-সেপ্টেম্বরে জল কমতে থাকে। এ সময় ছোট মাছ, ব্যাঙ, শামুক, ঝিনুকসহ নানা প্রাকৃতিক জলজপ্রাণীর বিচরণ বেড়ে যায়। জল ও প্রাকৃতিক খাবারকে উপলক্ষ করে সোনারগাঁয়ের পেরাব এলাকায় হাঁস পালনের উপযোগী চারনভূমিতে পরিনত হয়। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে সোনারগাঁ উপজেলার পেরাব বিলে গড়ে তোলেন একটি হাঁসের খামার। সেই হাঁসের খামারে বদলে গেছে দুই বন্ধুর ভাগ্য।
জামপুর ইউনিয়ন পেরাব গ্রামের শফিকুল (৩২) ও মিঠু (৩৩) দুই বন্ধু মিলে গড়ে তুলেছেন একটি ভ্রাম্যমাণ হাঁসের খামার। সারাদিন হাঁসগুলো বিলের প্রাকৃতিক খাবার খায়। সন্ধ্যায় সেগুলোকে শুকনো স্থানে রেখে পরিচর্যা শেষে পুনরায় সকালে বিলে উন্মুক্ত করা হয়। এক জায়গায় স্থির না রেখে পানি ও প্রাকৃতিক খাবারের প্রাপ্যতানুসারে স্থানান্তর করা হয় খামারটি।
ভ্রাম্যমাণ খামারটি একদিকে বদলে দিয়েছে দুই বন্ধুর ভাগ্য অন্যদিকে এলাকাবাসী পেয়েছে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রেরণা। শফিকুল ইসলাম জানান ছোট পরিসরে ইউটিভ দেখে হাঁস পালনের কথা মাথায় আসে। লাভের বিষয়টি বন্ধু মিঠুকে জানালে দুজনে মিলে ৩০ হাজার টাকা পুঁজি দিয়ে ছোট পরিসরে এ খামারটি করা হয়েছে। বর্তমানে তাদের খামারে হাঁসের সংখ্যা ১ হাজার টি। এপ্রিল মাসের শুরুতে হাঁসের বাচ্চাগুলো কেনা হয়, জুলাইয়ের মাঝামাঝি ডিম দেওয়া শুরু করেছে। এখন গড়ে প্রতিদিন ৩০০ টি ডিম পাচ্ছেন তারা।
খামারী মিঠু জানান, তাদের খাকি ক্যামবেল জাতের হাঁস রয়েছে। ৩ জন শ্রমিক হাঁসগুলোর দেখভাল করেন। ৩ জন শ্রমিকের মাসিক বেতন ৩০ হাজার টাকা। বাজারে চাহিদা থাকায় ডিমগুলো পাইকারী খামার থেকে প্রতিটি ১৭ টাকা হিসাবে কিনে নিচ্ছেন। ডিম বিক্রি করে প্রতিদিন ৫ হাজার ১শত হিসাবে মাসে ১লাখ ৫৩ হাজার টাকা আয় তাদের। খরচ বাদে প্রতিমাসে তাদের গড় আয় ১ লাখ টাকা। ৬ মাস পর্যন্ত হাসগুলো ডিম দেবে। পরে মাংস উপযোগী হাসগুলো বিক্রি করলেও লগ্নিকৃত টাকার চেয়েও অতিরিক্ত টাকা পাওয়া যাবে।
খামার দেখতে গিয়ে কথা হয় পেরাব এলাকার রিপন ও ফাহিমার সঙ্গে। তারা বলেন, ‘ডিম এবং হাঁস বিক্রির টাকায় অনেকেই নিজের ভাগ্য বদল করেছেন। দুই বন্ধুর খামার দেখে তার উৎসাহিত হয়েছেন। ভবিষ্যতে তাদের একটি হাঁসের খামার করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
সোনারগাঁ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, পেরাব হাঁস পালনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। দুই বন্ধুর হাঁসের খামারটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। হাঁসের খামারে অনেকেই বেকারত্ব দূর করেছেন। তার বিভাগ থেকে খামারীদের সরকারের নির্ধারিত মূল্যে ভ্যাকসিন, চিকিৎসা ও পরামর্শ সেবা দেওয়া হচ্ছে।