এস এম রাফি ৭ অক্টোবর ২০২৩ , ৮:৫৬ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
আওয়ামী লীগ এখন তার মনোনয়ন চূড়ান্ত করার কাজ করছে। আগামী জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে এমনটি মাথায় রেখে নির্বাচনের জন্য সংগঠন গোছানোর কাজ চূড়ান্ত করে ফেলেছে ক্ষমতাসীন দলটি।
এই সময় একদিকে যেমন আওয়ামী লীগ সারা দেশে সাংগঠনিক তৎপরতা চালাবে, নির্বাচন বিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে মাঠে থাকবে অন্যদিকে নির্বাচনে যেন ভালো এবং যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়, দলের ভিতর অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং বিরোধ যেন না থাকে তা নিশ্চিত করতে চাইছে।
আওয়ামী লীগ অক্টোবর মাসে উন্নয়নের উৎসব করছে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে জনসংযোগ করবেন এবং জনগনের কাছে ভোট চাইবেন। পাশাপাশি দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধ মেটানোর জন্য একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগের এরকম অন্তত ৬৫ টি আসন রয়েছে যেখানে একাধিক জনপ্রিয় প্রার্থী রয়েছে।
এসমস্ত জনপ্রিয় প্রার্থীদের মধ্যে যেকোনো একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হলেই তিনি বিজয়ী হবেন। আবার এরকম ৩৫টি আসন রয়েছে যেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা অত্যন্ত ভালো এবং জনপ্রিয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যদি মহাজোট বা ১৪ দলীয় জোট গঠিত হয় তাহলে ওই প্রার্থীরা বিপুল জনপ্রিয়তা থাকার পরও মনোনয়ন পাবেন না।
তারা যেন হতাশ না হন, জোটের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ না করেন সেই জন্য তাদেরকে বোঝানো হবে। এই জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দুই ধাপে অন্তত ১০০ টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই বৈঠকগুলোর দুটি ভাগ থাকবে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানিয়েছে। যেখানে স্পর্শকাতর আসন এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের কোন ত্যাগী পরীক্ষিত নেতা আছেন, যিনি শেষ পর্যন্ত হয়তো মনোনয়ন পাবেন না বিভিন্ন বাস্তবতার কারণে বা বর্তমানে যিনি এমপি আছেন তিনি এবার মনোনয়ন বঞ্চিত হচ্ছেন এরকম ক্ষেত্রগুলোতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ওয়ান টু ওয়ান বৈঠক করবেন।
অর্থাৎ যে ৩/৪ জন প্রার্থী আছেন তাদেরকে এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দদেরকে ডাকবেন। ডেকে তাদের কাছে মনোনয়নের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরবেন এবং কাকে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে এই নির্দেশনা দেবেন।
আর যে সমস্ত জায়গাগুলোতে একাধিক প্রার্থী মনোনয়নের জন্য কোন্দল করছে এবং নানা রকম বিরোধে জড়াচ্ছে তাদেরকে তিনি একসঙ্গে ডাকবেন। তবে এটি বিভাগ ওয়ারী হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সেখানে তিনি দলে বিভক্তি এবং কোন্দল সৃষ্টি না করার জন্য আহ্বান জানাবেন। এ ধরনের কোন্দল এবং বিভক্তি দলের কি ক্ষতি করতে পারে সে সম্পর্কেও তিনি বার্তা দিবেন।
পাশাপাশি ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার নির্দেশনা দিবেন। এর বাইরে তিনি আরেকটি বৈঠক করবেন যেখানে তিনি আওয়ামী লীগের আসনগুলোতে যেখানে জোট বা মহাজোটের প্রার্থীরা দাঁড়াবে সেই আসনের নেতাদেরকে তিনি গণভবনে ডাকবেন এবং তাদেরকে জোটের প্রার্থী এবং নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য অনুরোধ জানাবেন।
ধারণা করা হচ্ছে চলতি মাসেই এই কার্যক্রমগুলো শেষ করে ফেলবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর ফলে প্রায় সব আসনেই মনোনয়নের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, ইতিমধ্যে ৯৩ টি আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন চূড়ান্ত করে ফেলেছে এবং যারা চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন তারা সবুজ সংকেত পেয়েছেন।
তবে কোন ৯৩ টি আসনে সবুজ সংকেত প্রদান করা হয়েছে তা জানা যায়নি।
স্পর্শকাতর এবং হাড্ডাহাড্ডি বা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসনগুলোর ব্যাপারে চলতি মাসেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে।