চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: ১৪ এপ্রিল ২০২৫ , ৮:৪৫ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
ছিল না বৃষ্টি, না ছিল ঝড়, সকালে হালকা মিষ্টি রোধ আর এরই মধ্যে ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা প্রায় সাড়ে ৩শত বছরের পুরনো শিমুল গাছটি ঝড়ে পড়লো। এক নজর দেখতে শতশত মানুষের ভির। অনেকেই দুঃখ আর ভারাক্রান্ত মন নিয়ে কষ্ট প্রকাশও করেন।
জানা গেছে, শতশত বছর থেকে কালের স্বাক্ষী হয়ে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার মাছাবান্দা হারিশারডারা খালের উপর দাঁড়িয়ে ছিল একটি শিমুল গাছ। গাছটিকে ঘিরে রয়েছে নানা রুপকথা ও নানা গল্প। গাছটি মাছাবান্দা এলাকার আব্দুর কাদের এর জমিতে বিশাল স্থান নিয়ে বিভিন্ন লতাপাতা ঝড়িয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। উপস্থিত অনেক বৃদ্ধা মানুষও বলতে পারেনি গাছটি জন্মের কথা। তারাও তাদের দাদার কাছে এর জন্মের কথা জানতে পারেনি শুধু শুনেছে গল্প। শিমুল গাছটি দুর থেকে দেখছে পরিপাটি এবং সুন্দর দেখা যেত। তেমনি কাছে আসলে ভয়ে অনেকে দুরে থাকতো। কখনো গাছটির সবুজ পাতা সুন্দর্য্য বাড়িয়ে তুললো আর কখনো শিমুলের লাল ফুলে ফুলে অপরুপ রুপে দেখা যেত। গাছটি দেখতে এবং এর গল্প ও কাহিনি শুনতে দুর দুরান্ত থেকেও হাজারো মানুষ ভির করতো। প্রায় সাড়ে ৩শত বছরের এই কালের স্বাক্ষী হড়ে দাঁড়িয়ে থাকা গাছটি সোমবার সকালে হালকা মিষ্টি রোদে হঠাতেই গোড়া ভেঙ্গে ঝড়ে পড়ে। এই খবর শুনে গাছটি দেখার জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে শতশত মানুষের ভির জমায় গাছটি ঘিরে। এসময় এনজিও কর্মী আমিনুল ইসলাম বীর দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলেন, এই গাছটি ঘিরে হাজারো স্মৃতি রয়েছে এখানে জমিতে কাজ করতে আশা কত কৃষক ছায়ার মধ্যে বিশ্রাম নিতো, কত মানুষ দেখতে আসতো আর সেই শতশত বছরের স্মৃতি রেখে ঝড়ে পড়ায় সত্যি আমি ব্যথিত। গাছটি নিয়ে নানান কথা তুলে ধরে এলাকার এক বৃদ্ধা মতিয়ার রহমান (৭০) বলেন, আমাদের দাদারাও এই গাছের জন্মে কথা বলতে পারে না, এই গাছটিতে ঘিরে নানা স্মৃতি রয়েছে। তিনি আরো জানান, গাছটি কেউ কাটতেও সাহস পাইনি, যে আসতো বা কিনতে চাইতো তাকে স্বপ্ন দেখা হতো এবং কাটলে বিপদ হবে বলে স্বপ্ন দেখাতো আরো নানান গল্প এবং কাহিনি রয়েছে গাছটি ঘিরে, এমনো শোনা গেছে গাছটিতে আঘাত করলে রক্তের মতো বের হতো। প্রত্যাক্ষদর্শী জাহেদা বেগম বলেন, ঘটনার দিন আমরা কয়েকজন শাক তুলতে এসেছিলাম তখন না বৃষ্টি না কোন বাতাস ছিল কিন্তু হঠাতেই একটা শব্দ শুনি আর ঘুরে দেখি গাছটি মাটিতে পড়ে আছে। গাছাটির নিচের অংশ নষ্ট বা পচে যাওয়ায় গোড়া ভেঙ্গে তা ঝড়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন স্থানীয়রা। আব্দুল কাদের বলেন, গাছটি আমাদের জমিতে অনেকটা অংশ জুড়ে ছিল এটির ব্যাপারে নানা ধরনের কথা জড়িয়ে আছে এবং সুন্দর্য্য থাকায় বিভিন্ন লোকজন দেখতে আসতো তাই আমরা কখনো কাটার জন্য উদ্যোগ নেইনি। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কুরুনুজ্জামান শাহিন বলেন, একটি ইতিহাসের স্বাক্ষী ভেঙ্গে পড়ায় হাজারো স্মৃতি মুছে গেল।