uadmin ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ , ৭:১৩ পূর্বাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
সদরুল আইনঃ
আগামী ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। নির্বাচনে কারা থাকছে, কারা থাকছেন না তা পরিষ্কার হবে ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে।
তবে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের সমীকরণ কি দাঁড়াবে তা বোঝা যাবে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যেই।
কারণ এখন পর্যন্ত জাতীয় পার্টি তাদের প্রার্থীদেরকে প্রতীক বরাদ্দ করেনি। ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রতীক বরাদ্দের চিঠি স্ব স্ব নির্বাচনী কার্যালয়ে পৌঁছতে হবে। এ কারণে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চূড়ান্ত ভাবে ফয়সালা হবে নির্বাচনী রাজনীতির মেরুকরণ। কে থাকছে মাঠে, কে থাকছে না।
আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে এটা মোটামুটি নিশ্চিত। আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় শক্তি হল স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
সারা দেশেই প্রায় সব আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এই স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই এবার নির্বাচনের সবচেয়ে বড় শক্তি বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
এ কারণেই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বরং তাদেরকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কারণেই ভোটার উপস্থিতি বাড়বে বলে আশাবাদী আওয়ামী লীগ।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোটের মাঠে রাখতে আওয়ামী লীগ ১৪ দল এবং জাতীয় পার্টির সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে। ১৪ দলের মধ্যে এখন এক ধরনের অসন্তোষ এবং অস্বস্তি প্রকাশ্য রূপ নিতে শুরু করেছে।
১৪ দলের শরিকরা এখন পর্যন্ত জানে না যে, তাদের কটি আসন দেওয়া হবে এবং তারা কি প্রক্রিয়া নির্বাচন করবে। ১৪ দলের শরিকদেরকে আওয়ামী লীগ ১০টি আসন দেওয়ার ব্যাপারে নীতিগত ভাবে সম্মত হয়েছে বলে জানা যায়। তবে আজ রাতে তাদেরকে ৭ টি আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্র বলছে, ইচ্ছে করেই তারা বিষয়টিকে ঝুলিয়ে রেখেছে। ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত যেন স্নায়ুযুদ্ধে শরিকরা কোণঠাসা হয় এবং শেষ পর্যন্ত তারা যা ছাড় দেওয়া হচ্ছে তা মেনে নেয়।
তবে ১৪ দলের একজন শরিক বলেছেন, আওয়ামী লীগ তাদের সাথে যা করছে তা রীতিমতো অপমানজনক। এই অবস্থা যদি চলতে থাকে শেষ মুহূর্তে তারা নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই৷
তবে ১৪ দলের অন্য একজন নেতা বলেছেন তেমন কিছু ঘটবে না। মান অভিমান থাকবে, ক্ষোভ অসন্তোষ থাকবে, তারপরও আমাদের এই আদর্শিক জোট অব্যাহত থাকবে।
আওয়ামী লীগ যদি আমাদেরকে কম আসন দেয়, সেটি তাদের ভুল হবে। তবে ১৪ দল নির্বাচনে থাকবে কি থাকবে না, তা নিয়ে তেমন কোন উত্তেজনা বা দ্বন্দ্ব নেই। বরং উত্তেজনা এবং শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে জাতীয় পার্টিকে নিয়ে।
জাতীয় পার্টির আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে থাকবে কি থাকবে না, সেটি এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় পার্টি যে ২৮৭ জন প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তাদেরকে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়নি।
প্রতীক বরাদ্দের চিঠি আছে জিএম কাদেরের কাছে। জিএম কাদেরের জন্য এবার নির্বাচন প্রত্যাহারের বিষয়টি খুব সহজ। তিনি যদি শুধুমাত্র চিঠিটি প্রার্থীদের হাতে না দেন তাহলে জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে থাকবে না।
আজ জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের বৈঠক হবে। এই বৈঠকেই চূড়ান্ত হওয়ার কথা সব কিছু। কিন্তু এখন পর্যন্ত ফয়সালার কোন সুসংবাদ নেই গণমাধ্যমের হাতে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, আগামীকালই জাতীয় পার্টির যারা প্রার্থী হচ্ছেন তাদেরকে প্রতীক বরাদ্দের চিঠি দেওয়া হবে। এই ৪৮ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে নানামুখী তৎপরতা চলছে।
জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে আনার জন্য যেমন কেউ কেউ চেষ্টা করছেন, তেমনই জাতীয় পার্টিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য অনেকের অন্তহীন প্রচেষ্টা ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে। এই ‘টাগ অফ ওয়ারে’ কারা জয়ী হয় সেটাই দেখার বিষয়৷
অনেকে মনে করছেন যে জাতীয় পার্টির নির্বাচনে থাকা না থাকার ওপর এবারের নির্বাচনে অনেক কিছুই নির্ভর করছে।
আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সবকিছু পরিষ্কার হবে। বোঝা যাবে কি হচ্ছে নির্বাচনের।